সম্মানিত রওযা শরীফ সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার একখানা বাগান মুবারক:
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْقَبْرُ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ جَهَنَّمَ أَوْ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ক্ববর হচ্ছে জাহান্নামের গর্তসমূহ হতে একটি গর্ত অথবা সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার বাগানসমূহ থেকে একখানা সম্মানিত বাগান মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (ইছবাতু গাযাবিল ক্ববর লিলবাইহাক্বী ১/৫৫)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم:إِنَّمَا القَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কবর হচ্ছে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার বাগানসমূহ থেকে একখানা সম্মানিত বাগান মুবারক অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহ হতে একটি গর্ত।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত্ব ত্ববারনী ৮/২৭৩, মু’জামুশ শুয়ূখ ২/৮৬৭ ইত্যাদি)
স্বাভাবিকভাবে একজন ওয়ালীআল্লাহ উনার কবর বা মাজার শরীফ হচ্ছেন সম্মানতি জান্নাত উনার বাগানসমূহ থেকে একখানা বাগানস্বরূপ। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, যারা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করে থাকেন উনাদের কবরগুলোও সম্মানিত জান্নাত উনার বাগান মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত এবং সম্মানিত রহমত মুবারক উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যিয়ারত মুবারক করার স্থান। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَلَا وَمَنْ مَاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَحَ اللهُ لَهٗ فِـىْ قَبْرِهٖ بَابَيْنِ اِلَـى الْـجَنَّةِ اَلَا وَمَنْ مَاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَعَلَ اللهُ قَبْرَهٗ مَزَارَ مَلَائِكَةِ الرَّحْـمَةِ.
অর্থ: “সাবধান! যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনার কবরে উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত উনার দিকে দুটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সাবধান! যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত ব্যক্তি উনার কবরকে সম্মানিত রহমত মুবারক উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত যিয়ারত মুবারক করার স্থান বানাবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী ১৬/২৩, তাফসীরে কবীর ২৭/৫৯৫, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/২৩৯, তাখরীজু আহাদীছুল কাশ্শাফ ৩/২৩৮, নুজহাতুল মাজালিস ১/৩৬৫)
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে যিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক এবং সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিক, বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার হুকুম কী? অবশ্য অবশ্যই ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার হুকুম মুবারক হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার অনুরূপ। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ সমস্ত কায়িনাতের ক্বিবলা, কেন্দ্র বিন্দু। সুবহানাল্লাহ! সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত কায়িনাত উনার গোলাম, খাদিম। প্রধান চার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা দায়িমীভাবে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক, তা’যীম-তাকরীম মুবারক, ছানা-ছিফত মুবারক-এ মশগুল রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেভাবে দায়িমীভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে থাকেন, ঠিক তেমনিভাবে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর এই জন্যই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল ‘উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওই কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْنُ أَهْلُ بَيْت شَجَرَة النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সৃষ্টি জগতে আমি ব্যতীত আর কেউ আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার অধিকারী নেই। অর্থাৎ সৃষ্টি জগতে আমার পর পরই আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (তারতীবুল আমালী ১/২০২, আল ঈমা ইলা যাওয়ায়িদিল আমালী ৫/১৭৯)
সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ দুধপানকারিনী আছেন:
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا تُوُفِّـىَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ تُتِمُّ بَقِيَّةَ رَضَاعِهٖ
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন, যিনি উনার অবশিষ্ট দুধ মুবারক পান করার মেয়াদ পূর্ণ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল আহাদ ওয়াল মাছানী শরীফ)
এরূপ আরো অনেক রিওয়ায়েত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যদিও এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই সম্মানিত হাদীছ শরীফগুলো আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সকলের শান মুবারকেই প্রযোজ্য।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে এই বিষয়টিই স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যে, সমস্ত কায়িনাতই হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাদিম। সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর যখন উনাদেরকে সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয়েছে, তখন থেকেই মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক-এ সম্মানিত জান্নাতী দুধমাতাগণ উনারা উনাদেরকে দুধ মুবারক পান করানো থেকে শুরু করে উনাদের যাবতীয় সমস্ত প্রকার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত বয়স মুবারক সম্মানিত দুধ মুবারক পান করার শেষ সীমায় উপনীত হয়েছেন, তখন সম্মানিত জান্নাতী দুধমাতাগণ উনারা উনাদের সম্মানিত দুধ মুবারক পান করানো থেকে বিরত থেকেছেন। সুবহানাল্লাহ! এছাড়া মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক-এ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দায়িমীভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! এইভাবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়ার বিষয়টি ফায়সালা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, উনারা জান্নাতী বয়স মুবারক-এ উপনীত হওয়া পর্যন্ত উনাদের সম্মানিত বয়স মুবারক বাড়তে থাকেন। অতঃপর যখন উনারা সম্মানিত জান্নাতী বয়স মুবারক তথা ৩৩ বছর বয়স মুবারক-এ উপনীত হয়েছেন, তখন উনাদের বয়স মুবারক বৃদ্ধি পাওয়া বন্ধ হয়েছেন। উনারা বর্তমানে সেই সম্মানিত জান্নাতী বয়স মুবারকেই সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের, বিশেষ করে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক, খুছূছিয়াত মুবারক সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি শুধু খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবূল করুন, হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফত-মুহব্বত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত, কুরবত মুবারক, পবিত্রতা ও ইছলাহী মুবারক নছীব করুন। আমীন!
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-আল্লামা মুহম্মদ ছিদ্দীকুর রহমান। © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْقَبْرُ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ جَهَنَّمَ أَوْ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ক্ববর হচ্ছে জাহান্নামের গর্তসমূহ হতে একটি গর্ত অথবা সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার বাগানসমূহ থেকে একখানা সম্মানিত বাগান মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (ইছবাতু গাযাবিল ক্ববর লিলবাইহাক্বী ১/৫৫)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم:إِنَّمَا القَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কবর হচ্ছে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার বাগানসমূহ থেকে একখানা সম্মানিত বাগান মুবারক অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহ হতে একটি গর্ত।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত্ব ত্ববারনী ৮/২৭৩, মু’জামুশ শুয়ূখ ২/৮৬৭ ইত্যাদি)
স্বাভাবিকভাবে একজন ওয়ালীআল্লাহ উনার কবর বা মাজার শরীফ হচ্ছেন সম্মানতি জান্নাত উনার বাগানসমূহ থেকে একখানা বাগানস্বরূপ। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, যারা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করে থাকেন উনাদের কবরগুলোও সম্মানিত জান্নাত উনার বাগান মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত এবং সম্মানিত রহমত মুবারক উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যিয়ারত মুবারক করার স্থান। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَلَا وَمَنْ مَاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَحَ اللهُ لَهٗ فِـىْ قَبْرِهٖ بَابَيْنِ اِلَـى الْـجَنَّةِ اَلَا وَمَنْ مَاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَعَلَ اللهُ قَبْرَهٗ مَزَارَ مَلَائِكَةِ الرَّحْـمَةِ.
অর্থ: “সাবধান! যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনার কবরে উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত উনার দিকে দুটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সাবধান! যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত ব্যক্তি উনার কবরকে সম্মানিত রহমত মুবারক উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত যিয়ারত মুবারক করার স্থান বানাবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী ১৬/২৩, তাফসীরে কবীর ২৭/৫৯৫, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/২৩৯, তাখরীজু আহাদীছুল কাশ্শাফ ৩/২৩৮, নুজহাতুল মাজালিস ১/৩৬৫)
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে যিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক এবং সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিক, বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার হুকুম কী? অবশ্য অবশ্যই ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার হুকুম মুবারক হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার অনুরূপ। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ সমস্ত কায়িনাতের ক্বিবলা, কেন্দ্র বিন্দু। সুবহানাল্লাহ! সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত কায়িনাত উনার গোলাম, খাদিম। প্রধান চার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা দায়িমীভাবে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক, তা’যীম-তাকরীম মুবারক, ছানা-ছিফত মুবারক-এ মশগুল রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেভাবে দায়িমীভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে থাকেন, ঠিক তেমনিভাবে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর এই জন্যই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল ‘উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওই কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْنُ أَهْلُ بَيْت شَجَرَة النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সৃষ্টি জগতে আমি ব্যতীত আর কেউ আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার অধিকারী নেই। অর্থাৎ সৃষ্টি জগতে আমার পর পরই আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (তারতীবুল আমালী ১/২০২, আল ঈমা ইলা যাওয়ায়িদিল আমালী ৫/১৭৯)
সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ দুধপানকারিনী আছেন:
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا تُوُفِّـىَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ تُتِمُّ بَقِيَّةَ رَضَاعِهٖ
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন, যিনি উনার অবশিষ্ট দুধ মুবারক পান করার মেয়াদ পূর্ণ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল আহাদ ওয়াল মাছানী শরীফ)
এরূপ আরো অনেক রিওয়ায়েত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যদিও এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই সম্মানিত হাদীছ শরীফগুলো আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সকলের শান মুবারকেই প্রযোজ্য।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে এই বিষয়টিই স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যে, সমস্ত কায়িনাতই হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাদিম। সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর যখন উনাদেরকে সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয়েছে, তখন থেকেই মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক-এ সম্মানিত জান্নাতী দুধমাতাগণ উনারা উনাদেরকে দুধ মুবারক পান করানো থেকে শুরু করে উনাদের যাবতীয় সমস্ত প্রকার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত বয়স মুবারক সম্মানিত দুধ মুবারক পান করার শেষ সীমায় উপনীত হয়েছেন, তখন সম্মানিত জান্নাতী দুধমাতাগণ উনারা উনাদের সম্মানিত দুধ মুবারক পান করানো থেকে বিরত থেকেছেন। সুবহানাল্লাহ! এছাড়া মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক-এ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দায়িমীভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! এইভাবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়ার বিষয়টি ফায়সালা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, উনারা জান্নাতী বয়স মুবারক-এ উপনীত হওয়া পর্যন্ত উনাদের সম্মানিত বয়স মুবারক বাড়তে থাকেন। অতঃপর যখন উনারা সম্মানিত জান্নাতী বয়স মুবারক তথা ৩৩ বছর বয়স মুবারক-এ উপনীত হয়েছেন, তখন উনাদের বয়স মুবারক বৃদ্ধি পাওয়া বন্ধ হয়েছেন। উনারা বর্তমানে সেই সম্মানিত জান্নাতী বয়স মুবারকেই সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের, বিশেষ করে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক, খুছূছিয়াত মুবারক সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি শুধু খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবূল করুন, হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফত-মুহব্বত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত, কুরবত মুবারক, পবিত্রতা ও ইছলাহী মুবারক নছীব করুন। আমীন!
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-আল্লামা মুহম্মদ ছিদ্দীকুর রহমান। © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
0 comments:
Post a Comment