by Admin
|
posted: Saturday, November 21, 2015
|
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত, ছানা-ছিফত, প্রশংসা তথা মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ সর্বপ্রথম পালন করেছেন মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন তিনি স্বয়ং নিজে। এ সম্পর্কে হাদীছে কুদসী শরীফ-এ উল্লেখ করা হয়েছে-
كنت كنزا مخفيا فاحببت ان اعرف فخلقت الخلق لاعرف.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি গুপ্ত ছিলাম। আমার মুহব্বত হলো যে, আমি জাহির হই। তখন আমি আমার (রুবূবিয়াত) জাহির করার জন্যই সৃষ্টি করলাম মাখলূকাত (আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে)।” (আল মাকাসিদুল হাসানা/ ৮৩৮, কাশফূল খিফা/২০১৩, আসনাল মুত্বালিব/১১১০, তমীযুত তীব/১০৪৫, আসরারুল মারফুআ/৩৩৫, তানযিয়াতুশ শরীয়াহ ১/১৪৮, আদ্দুরারুল মুন্তাছিরা/৩৩০, আত তাযকিরা ফি আহাদীসিল মুশতাহিরা/১৩৬, সিররুল আসরার, কানযুল উম্মাল)
মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদীছে কুদসী শরীফ-এ আরো ইরশাদ করেন-
لولاك لـما اظهرت الربوبية.
অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি না হলে বা আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি আমার রুবূবিয়াতই প্রকাশ করতাম না।” (কানযুল উম্মাল)
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما انه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اتانى جبريل عليه السلام فقال يا رسول الله صلى الله عليه وسلم لولاك ماخلقت الجنة ولولاك ماخلقت النار.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, হযরত জিবরীল আমীন আলাইহিস সালাম তিনি আমার নিকট আগমন করে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এই বলে পাঠিয়েছেন যে, আপনি যদি না হতেন তবে আমি জান্নাত ও জাহান্নাম কিছুই সৃষ্টি করতাম না।” (দায়লামী, কানযুল উম্মাল-৩২০২২)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মাখলূকাত সৃষ্টি করেছেন তথা মহান আল্লাহ পাক উনার রুবূবিয়াতই প্রকাশ করেছেন মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করার উদ্দেশ্যে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আলমে আরওয়াহতেও সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন ও উনাদের থেকে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ওয়াদা নিয়েছেন। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন-
واذ اخذ الله ميثاق النبين لـما اتيتكم من كتاب وحكمة ثم جائكم رسول مصدق لـما معكم لتؤمنن به ولتنصرنه قال ااقررتم واخذتم على ذلكم اصرى قالوا اقررنا قال فاشهدوا وانا معكم من الشاهدين. فمن تولى بعد ذلك فاولئك هم الفاسقون.
অর্থ: “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন সেই সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আলমে আরওয়াহতে সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাছ থেকে ওয়াদা নিয়েছিলেন যে, আপনাদেরকে আমি কিতাব ও হিকমত দান করবো। অতঃপর আপনাদেরকে সত্য প্রতিপাদনের জন্য (নুবুওওয়াত ও রিসালতের হাক্বীক্বী ফায়িজ দেয়ার জন্য) আখিরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ নিবেন। আপনারা উনাকে নবী ও রসূল হিসেবে মেনে নিবেন এবং সর্ববিষয়ে উনার খিদমত করবেন (উনার মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করবেন)। আপনারা কি এই ওয়াদার কথা মেনে নিলেন? উত্তরে উনারা সকলে বললেন, হ্যাঁ আমরা এই ওয়াদা স্বীকার করে নিলাম (অর্থাৎ আমরা যমীনে গিয়ে আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করবো)। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন: আপনারা সাক্ষী থাকুন, আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী হয়ে গেলাম। তবে জেনে রাখুন, যারা এই ওয়াদাকৃত বিষয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে (যারা মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করবে না বা এর বিরোধিতা করবে) তারা চরম পর্যায়ের ফাসিক (ও কাফির) হয়ে যাবে।” (সূরা আলে ইমরান : আয়াত শরীফ ৮১-৮২)
এ আয়াত শরীফ-এ স্বয়ং আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি নিজেই হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন। আবার হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যমীনে এসে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং যারা যমীনে এসে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করবে না বরং এর বিরোধিতা করবে তারাই চরম পর্যায়ের ফাসিক ও কাফির হবে সে সম্পর্কে ঘোষণাও দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ ফরমান-
انا ارسلناك شاهدا ومبشرا ونذيرا. لتؤمنوا بالله ورسوله وتعزروه وتوقروه وتسبحوه بكرة واصيلا.
অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সৃষ্টি করেছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে। অতএব, তোমরা (উম্মতরা) মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি ঈমান আনো এবং তোমরা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত করো, সম্মান করো ও সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ সদা-সর্বদা উনার ছানা-ছিফত বর্ণনা করো।” (সূরা ফাতহ : আয়াত শরীফ ৮-৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন-
يايها الناس قد جاءتكم موعظة من ربكم وشفاء لـما فى الصدور وهدى ورحمة للمؤمنين. قل بفضل الله وبرحمته فبذالك فليفرحوا هو خير مما يجمعون .
অর্থ: “হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এসেছেন মহান নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সকল ব্যাধিসমূহ দূরকারী এবং ঈমানদারদের জন্য মহান হিদায়েতকারী ও মহান রহমতস্বরূপ (হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া, ইহসান ও রহমত (হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনাকে পেয়ে উনার জন্য ঈদ উদযাপন তথা খুশি প্রকাশ করো। তোমরা যতো কিছুই করোনা কেনো তিনিই হচ্ছেন সমগ্র কায়িনাতের জন্য সবচেয়ে বড় ও সর্বোত্তম নিয়ামত।” (সূরা ইউনুস : আয়াত শরীফ ৫৭- ৫৮)
এ আয়াত শরীফ দ্বারা মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মাখলূকাতের জন্য ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাকে ফরয করে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, এ সম্পর্কে তিনটি শব্দ রয়েছে। যথা: ميلاد অর্থ: জন্মের সময়, مولد অর্থ: জন্মের স্থান, مولود অর্থ: সদ্য প্রসূত সন্তান। আর ইছতিলাহী বা ব্যবহারিক অর্থ হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে ছানা-ছিফত করা ও উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা; যা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
ان الله وملئكته يصلون على النبى يايها الذين امنوا صلوا عليه وسلموا تسليما.
অর্থ: “নিশ্চয় মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত পাঠ করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও উনার প্রতি ছলাত পাঠ করো এবং সালাম দেয়ার মতো সালাম দাও অর্থাৎ যথাযথ আদব সহকারে তথা ক্বিয়াম বা দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করো।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ ৫৬)
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Friday, November 20, 2015
|
একবার আখিরী রসূল, নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে উনার সম্মানিত দামাদ আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি এসে আরজি করলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম; আমাকে আমার সম্পদ কমে যাওয়ার কোনো তাসবীহ দান করুন।’ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একথা শুনে আশ্চর্য প্রকাশ করলেন। এবং বললেন, কী ব্যাপার হে আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম, লোকজন ধন-সম্পদ বাড়াতে চায়। আর আপনি সম্পদ কমে যাবার জন্য দোয়া মুবারক চাইছেন। এতে আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, অন্যান্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অনেক নফল ইবাদত করেন। বেশি বেশি পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করেন। কিন্তু আমার মনে হয় আমি বেশি সম্পদের হিসাবের কারণে ততটুকু করতে পারি না।
তখনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্পদ কমানোর তাসবীহ মহান আল্লাহ পাক তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নুরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন- ‘আপনি যদি আপনার সম্পদ কমাতে চান, তাহলে আপনি যেন মহান আল্লাহ পাক উনার পথে দান কমিয়ে দেন।’
একথা মুবারক শুনে আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, এটা কিভাবে সম্ভব যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সম্পদ দান করবেন, আর আমি উনার পথে খরচ করবো না? তখন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন- ‘এটাও কি সম্ভব যে, আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পথে দান করবেন অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্পদ বাড়িয়ে দিবেন না। সুবহানাল্লাহ!
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-মুহম্মদ রেজা-ই-রহমান। © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Thursday, November 19, 2015
|
(১)
খলীফাতু রসুলিল্লাহ হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মীলাদ শরীফ পাঠ (মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপলক্ষ্যে এক দিরহাম ব্যয় করবে সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(২)
আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে (বিলাদত দিবসকে) বিশেষ মর্যাদা দিল সে মূলতঃ ইসলামকেই পূনরুজ্জীবিত করল।“ (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(৩)
আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করল সে যেন বদর ও হুনায়েন যুদ্ধে শরীক থাকল।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(৪)
আমীরুল মু’মিনীন হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করল সে ব্যক্তি অবশ্যই ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
জগৎখ্যাত, সর্বজনমান্য, সকলের নিকট অনুসরণীয় হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের দৃষ্টিতে সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্ব ও ফযীলত
(৫)
হযরত ইমাম হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি ওহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ থাকত তাহলে তা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে ব্যয় করতাম। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৬)
হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষ্যে লোকজন একত্রিত করলো এবং খাদ্য তৈরি করলো ও জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং মীলাদ পাঠের জন্য উত্তম ভাবে (তথা সুন্নাহ ভিত্তিক) আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন সিদ্দীক শহীদ, সালেহীনগণের সাথে উঠাবেন এবং তাঁর ঠিকানা হবে জান্নাতে নাঈমে।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৭)
হযরত মারুফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমা করে, মজলিশে আলোর ব্যবস্থা করে, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নতুন লেবাস পরিধান করে,মীলাদুন্নবীর তাজিমার্থে সু-ঘ্রাণ ও সুগন্ধি ব্যবহার করে। আল্লাহ পাক তাকে নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত হবে।“ (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৮)
হযরত ইমাম সাররী সাক্বত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করল সে যেন তার জন্য জান্নাতে রওজা বা বাগান নিদিষ্ট করলো। কেননা সে তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুহব্বতের জন্যই করেছে। আর আল্লাহ্ পাক-এর রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযি, মিশকাত, আন নেয়ামাতুল কুবরা)
(৯)
সাইয়্যিদুত ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আয়োজনে উপস্থিত হল এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলো। সে তার ঈমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে অর্থাৎ সে বেহেশ্তি হবে।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(১০)
হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মিলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে, লবণ, গম বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্যের উপর ফুঁক দেয়, তাহলে এই খাদ্য দ্রব্যে অবশ্যই বরকত প্রকাশ পাবে। এভাবে যে কোন কিছুর উপরই পাঠ করুক না কেন। (তাতে বরকত হবেই)”। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(১১)
হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
উক্ত মোবারক খাদ্য মীলাদ পাঠকারীর বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হয়না। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(১২)
হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
যদি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে কোন পানিতে ফুঁক দেয়, অতঃপর উক্ত পানি কেউ পান করে তাহলে তার অন্তরে এক হাজার নূর ও রহমত প্রবেশ করবে। আর তার থেকে হাজারটি বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ রোগ দূর হবে। যে দিন সমস্ত ক্বলব (মানুষ) মৃত্যুবরণ করবে সেদিনও ঐ মীলাদুন্নবীর পানি পানকারী ব্যক্তির অন্তর ম"ত্যু বরণ করবে না। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা) (চলবে)
(১৩)
হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্্যাপন করে রৌপ্যের অথবা স্বর্ণের দেরহামসমূহের উপর ফুঁক দেয় অতঃপর তা অন্য জাতীয় মুদ্রার সাথে মিশায় তাহলে তাতে অবশ্যই বরকত হবে। এবং এর পাঠক কখনই ফকীর হবে না।
আর উক্ত পাঠকের হাত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর (মীলাদ পাঠের) বরকতে কখনও খালি হবে না। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’য়ামাতুল কুবরা)
(১৪)
হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
যে স্থানে বা মসজিদে অথবা মহল্লায় মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয় বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্্যাপন করা হয় সেখানে অবশ্যই আল্লাহ পাকের ফেরেস্তাগণ বেষ্টন করে নেন। আর তাঁরা সে স্থানের অধিবাসী গণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেন। আর আল্লাহ পাক তাদেরকে স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেন। আর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান চার ফেরেস্তা, অর্থাৎ হযরত জিব্রাইল, মীকাইল, ইসরাফিল ও আযরাইল আলাইহিমুস্্ সালামগণ মীলাদ শরীফ পাঠকারীর উপর বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর উপর সালাত-সালাম পাঠ করেন। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(১৫)
ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
“যখন কোন মুসলমান নিজ বাড়ীতে মীলাদ শরীফ পাঠ করে তখন সেই বাড়ীর অধিবাসীগণের উপর থেকে আল্লাহ্ পাক অবশ্যই খাদ্যাভাব, মহামারী, অগ্নিকাণ্ড, ডুবে মরা, বালা মুসিবত, হিংসা-বিদ্বেষ, কু-দৃষ্টি, চুরি ইত্যাদি উঠিয়ে নেন। যখন উক্ত ব্যক্তি মারা যান তখন আল্লাহ পাক তাঁর জন্য মুনকীর-নকীরের সুওয়াল-জাওয়াব সহজ করে দেন। আর তাঁর অবস্থান হয় আল্লাহ্ পাক-এর সন্নিধানে সিদকের মাকামে। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা) যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তাযীম করতে চাইবে তার জন্য উপরোক্ত বর্ণনা যথেষ্ট।
আর যে ব্যক্তির নিকট ঈদে মীলাদুন্নবীর তা’যীম নাই (সম্মান করে না) সারা দুনিয়া পূর্ণ করেও যদি তাঁর প্রশংসা করা হয় তথাপিও তার অন্তর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মহব্বতে প্রকম্পিত হবে না।
আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে তাদের দলভুক্ত করুন যারা ঈদে মীলাদুন্নবীর মর্যাদা দান করেন এবং এর মর্যাদা উপলব্ধি করেন। তিনি আমাদেরকে তাঁর হাবীব, নবী গনের নবী, রসূল গনের রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আখাস্সুল খাস মুহিব্বীন ও অনুসারী বানিয়ে দিন। আমীন। ইয়া রব্বুল আলামীন, আয় আল্লাহ পাক, সালাত ও সালাম বর্ষিত করুন সাইয়্যিদুনা নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর পরিবার ও সাহাবীগণের প্রতি কেয়ামত পযর্ন্ত।
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Tuesday, November 17, 2015
|
ফ্রান্সে
সন্ত্রাসবাদী আইএস’র নাটকীয় হামলায় কয়েকজন নিহত হয়েছে বলে তাদের জন্য মায়া
কান্না কাঁদছেন? আপনি কি জানেন ফ্রান্স নিজে কতো বড় সন্ত্রাসবাদী দেশ?
আপনি কি জানেন পূর্বে এবং বর্তমানে কতজন মুসলমানকে তারা নির্মমভাবে হত্যা
করেছে? তাহলে একনজরে দেখে নিন তাদের সন্ত্রাসের কালো ইতিহাস-
১. ক্রুসেড যুদ্ধের সময় মুসলিমদের দুনিয়ার যমীন থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিলো ফ্রান্স। (তথ্যসূত্র: ক্রুসেডস, উইকিপিডিয়া)
২. উসমানীয় খিলাফতের পতন ঘটিয়েছিল ফ্রান্স। (তথ্যসূত্র: উসমানীয় খলীফা, উইকিপিডিয়া)
৩.
১৯৬০ সালে আফ্রিকায় ৫০বারেরও বেশি সেনা পাঠিয়ে আফ্রিকান মুসলমানদের উপর
গণহত্যা চালিয়েছে এই সন্ত্রাসবাদী ফ্রান্স। (তথ্যসূত্র: লেখক ফ্রান্সিস
ডি’অ্যালেনকোন ফ্রান্সের ‘লিডোভি নোভিনি’ নামক পত্রিকায় এ তথ্য দিয়েছে)
৪. আলজেরিয়াতে ১০ মিলিয়ন মুসলিমকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এই ফ্রান্স। (তথ্যসূত্র: বিবিসি/২৩ জানুয়ারি ২০১৩; ওয়ার্লড বুলেটিন)
৫.
পরগাছা ইসরাইলের বিরুদ্ধে আরবরা যুদ্ধ করতে করতে যখন একের পর এক ইসরাইল
ভূমির পতন ঘটাচ্ছিল তখন এই ইসলামবিদ্বেষী ফ্রান্স বলেছিলো- আমাদের সব
অস্ত্র নিয়ে ইসরাইলকে রক্ষা করো। [তথ্যসূত্র: Jewish Political Studies
Reviwe 18:1-2 (Spring 2006), Jerusalem Center for Public Affairs,
Israel]
৬. বর্তমানেও পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যাঙ্গ
প্রকাশ করে যাচ্ছে ফ্রান্স।
৭. ফ্রান্সে এখনো কোনো মুসলমান পবিত্র
দ্বীন ইসলাম উনার অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তার জেল জরিমানা ও
শাস্তি ভোগ করতে হয়। (সূত্র: রেডিও তেহরান/২০ সেপ্টেম্বর ২০১২)
৯. শান্তির দেশ লিবিয়াকে ধ্বংস করার যুদ্ধে আমেরিকাকে সাহায্য করেছে ফ্রান্স। (সূত্র: রেডিও তেহরান/১৯ মার্চ ২০১১)
ফ্রান্সের
সন্ত্রাসবাদের ফিরিস্তি তুলে ধরে শুরু করা যাবে, কিন্তু শেষ করা যাবেনা।
সবকিছু জেনেও যারা মুসলমান হয়ে ফ্রান্সের পক্ষপাতিত্ব করবে, হারাম বিশ্বকাপ
ফুটবল খেলার সময় ফ্রান্সের পতাকা উড়াবে তারা কি আদৌ মুসলমান থাকবে?
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-মুহম্মদ ইবরাহীম সোহেল। © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
Recent Comments