পহেলা বৈশাখ


মুঘল সম্রাট আকবর খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে ৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬ ঈসায়ীতে হিজরী সনের পরিবর্তে ফসলী সন প্রবর্তন করে । পরবর্তীতে ১৫৮৪ ঈসায়ীর ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাঙলা সন বা বঙ্গাব্দ হিসেবে গণনা শুরু হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত। আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের প্রথম খবর পাওয়া যায় ১৯১৭ ঈসায়ীতে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। পহেলা বৈশাখে হালখাতা পূজা নামে হিন্দুদের আলাদা উৎসব রয়েছে, রয়েছে চৈত্রসংক্রান্তি, শিবপূজা, রয়েছে লোমহর্ষক চরক পূজা। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার প্রধান তিনটি ক্ষুদ্রজাতিস্বত্তা রয়েছে যাদের প্রত্যেকেরই বছরের নতুন দিনে উৎসব আছে। ত্রিপুরাদের বৈশুখ, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসব। বর্তমানে তিনটি জাতিস্বত্ত্বা একত্রে এই উৎসবটি পালন করে। যৌথ এই উৎসবের নাম বৈসাবি। উৎসবের নানা দিক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো মারমাদের পানি উৎসব। অথচ আজকে মুসলমান সমাজ পহেলা বৈশাখ পালন করছে, বৈশাখী মেলায় যাচ্ছে, বেপর্দা হচ্ছে, ইলিশ-পান্তা খাচ্ছে। তারা একবারও ফিকির করলো না যে, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা-ক্বিয়াসের কোথাও বছরের প্রথম দিন (হোক সেটা বাংলা সন কিংবা আরবী সন) পালন করার কথা উল্লেখ নেই বরং এটা পালনের মাধ্যমে মুসলমানরা হিন্দু-বৌদ্ধেরই অনুসরণ করেছে।(নাউযুবিল্লাহ্‌) অন্যদিকে এটা হিজরী সনকে ধ্বংসের নীল নকশায় শামিলের নামান্তার। আবার, কতিপয় তথাকথিত বাংলা সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ পহেলা বৈশাখকে বাঙলী ঐতিহ্য বলে বুলি আউড়ায়। অথচ বাঙলা সন প্রবর্তনের মুল হোতা সম্রাট আকবর একজন মোঙ্গলীয়ান, তাই এটা বাঙলীর এতিহ্য নয়। আবার তারা পহেলা বৈশাখকে হাজার বছরের ঐতিহ্য বলে থাকে, অথচ সম্রাট আকবরের মাতৃভাষা ছিল ফার্সি। উপমহাদেশে বাঙলা ভাষা প্রবর্তিত হয় ১৮৩৬ ঈসায়ীতে। এর পূর্বে এখানে ফার্সি ভাষা প্রচলিত ছিল। ইংরেজ জলদস্যূরা এদেশ দখল করে এখানে ফার্সি ভাষার পরিবর্তে বাঙলা ভাষা প্রবর্তন করে। আর এ উপমহাদেশে বাঙলা ভাষার এখনো ২০০ বছরও পূর্ণ হয়নি।

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment