সম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফই হচ্ছেন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ।
যা কুল-কায়িনাতের সকল রাত ও দিনের চেয়েও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি মর্যদাসম্পন্ন ও ফযীলতপূর্ণ রাত ও দিন মুবারক-১


খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّا اَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সম্মানিত কাউছার বা সমস্ত ভালাই অর্থাৎ সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয়গুলো হাদিয়া মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা কাওছার শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ: ১)
এই সম্মানিত কাওছার শরীফ উনার লক্ষ-কোটি ব্যাখ্যা মুবারক। তার মধ্যে একখানা ব্যাখ্যা মুবারক হচ্ছেন, ‘খইরে কাছীর’ তথা সমস্ত প্রকার ভালাই। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত ভালাই তথা সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয়গুলো হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অন্যদিক থেকে উনার সাথে যে বিষয় মুবারকগুলো সম্পৃক্ত হয়েছেন, সে বিষয় মুবারকগুলো সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ!
যার কারণে এই ব্যাপারে সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা করেছেন যে,
اِنَّ التُّرْبَةَ الَّتِىْ اِتَّصَلَتْ اِلٰى اَعْظُمِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَفْضَلُ مِنَ الْاَرْضِ وَالسَّمَاءِ حَتَّى الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ.
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার সাথে এক মুহূর্তের তরেও স্পর্শ মুবারক করেছেন, যেই মাটি, ধূলি-বালি তথা পদার্থ-বস্তু যা কিছুই হোক না কেন, তাই মহাসম্মানিত ও বরকতময় এবং ফযীলতপূর্ণ হয়ে গিয়েছেন। আসমান-যমীন; এমন কি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ কোটিগুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ!
অন্য ইজমা মুবারক-এ বলা হয়েছে,
فَاِنَّهٗ اَفْضَلُ مُطْلَقًا مِنَ الْكَعْبَةِ وَالْكُرْسِىّ حَتّٰى الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ.
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক-এ যা কিছু এসেছেন তা অবশ্যই সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুর্সী শরীফ; এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি ফযীলতপ্রাপ্ত, সম্মানিত, শ্রেষ্ঠ।’ সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক-এ যা কিছু এসেছেন তা আসমান-যমীন, সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুর্সী শরীফ, মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যা কিছু রয়েছে; এমনকি সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি পবিত্র, ফযীলতপ্রাপ্ত, সম্মানিত এবং শ্রেষ্ঠ।’ সুবহানাল্লাহ!
সেই বিষয়টি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে স্পষ্ট হয়ে গেছে। যেটা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا اُسْرِىَ بِهٖ لَيْلَةَ الْمِعْرَاجِ اِلَى السَّمَوَاتِ الْعُلٰى وَوَصَلَ اِلَى الْعَرْشِ الْمُعَلّٰى اَرَادَ خَلْعَ نَعْلَيْهِ اَخْذًا مّـِنْ قَوْلِهٖ تَعَالٰى لِسَيّـِدِنَا حَضْرَتْ مُوسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ حِيْنَ كَلَّمَهٗ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. فَنُوْدِىَ مِنَ الْعَلِىِّ الْاَعْلٰى يَا حَضْرَتْ مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ! لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعّـِلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلٰى غَيْرِهٖ مُتَبَرِّكًا فَصَعِدَ النَّبِىُّ اِلَى الْعَرْشِ وَفِىْ قَدَمَيْهِ النَّعْلَانِ وَحَصَلَ لَهٗ بِذٰلِكَ عِزٌّ وَّشَأْنٌ.
অর্থ: ‘যখন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে সুউচ্চ সপ্ত আসমান অতিক্রম করে সম্মানিত আরশে মুয়াল্লা তথা সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত আরশে আযীম তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন কিনা সেই বিষয়টি চিন্তা মুবারক করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ওই বাণী মুবারক ফিকির করে, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি (যখন সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তুর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলার জন্য তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন) হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى.
‘আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। (সেখানে আমার সম্মানিত আরশে আযীম থেকে ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক পতিত হয়েছে। যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! তাই আপনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই বিষয়টি ফিকির করে উনার

সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলার ফিকির করেছিলেন।) তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ওহী মুবারক করলেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। কেননা আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের পরশে, আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধুলি মুবারক উনার স্পর্শ মুবারক-এ ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ পরিধান মুবারক করা অবস্থাতেই সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার উপর সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। আর সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক উনাদের পরশ মুবারক পেয়ে, স্পর্শ মুবারক পেয়ে, উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক উনাদের ধুলি মুবারক পেয়ে ইয্যত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন। সুবাহানাল্লাহ!’ (শরহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিবিল লাদুননিয়্যাহ শরীফ, ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ)
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-আল্লামা মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীক্ব। © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment