‘সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ’, ‘সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম’, ‘সাইয়্যিদে ঈদে আকবার’ ‘পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’


‘সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ’, ‘সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম’, ‘সাইয়্যিদে ঈদে আকবার’ ‘পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’-এর সম্মানার্থে
বৎসরের সর্বশ্রেষ্ঠ এ মুবারক দিনটি সর্বোত্তমভাবে পালনের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তথা আলাদা বাজেট বরাদ্দ, গোটা রবীউল আউয়াল শরীফব্যাপী সারাদেশে অনুষ্ঠান পালন এবং ছুটি ঘোষণার জন্য আইন প্রণয়ন করা প্রসঙ্গে
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ‘মাননীয় স্পিকার’ ও ‘মাননীয় সংসদ সদস্য’দের প্রতি উদাত্ত আহবান।


মুহতারাম,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে সংসদ একটি সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান। মাননীয় সংসদ সদস্যগণ শুধু জনপ্রতিনিধিই নন; তারা আইনপ্রণেতাও বটে। সুতরাং ইসলামী অনুষঙ্গে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তাদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
মুহতারাম,
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আজ ৪০ বছর হলো। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এদেশবাসী স্বাধীনতার সুফল কতটুকু লাভ করেছে তা এক মহা প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। কারণ, স্বাধীন বাংলাদেশে আজও চলছে ঔপনিবেসিক আমলের আইনকানুন। যে ঔপনিবেসিক আইনকানুনে এদেশে ৯৭ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের আবেগ, অনুভূতি, চেতনার তথা ধর্মীয় ভাবাবেগের কিছুই প্রতিফলিত হয়নি।
মুহতারাম,
এদেশ আজ স্বাধীন। জালেম পাকিরা চলে গেছে। কিন্তু দেশ আজও জুলুম-শোষণ তথা দুর্নীতির করাল থাবা থেকে মুক্ত হয়নি। সিন্ডিকেট মজুদদারি বেড়েছে চরমভাবে। ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ছে অবিশ্বাস্যভাবে। লেলিহান অগ্নিশিখার মতো ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। ধনী আরো ধনী হচ্ছে। গরিব আরো গরিব হচ্ছে। বাড়ছে রাহাজানি, ছিনতাই, ডাকাতি। বাড়ছে খুন-ধর্ষণ, নারী টিজিংসহ হাজারো নারী নির্যাতন। সামাজিক ভারসাম্য একেবারে ভেঙ্গে গেছে। মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় হয়েছে।

মুহতারাম,
৯৭ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে এ অবস্থা তো হতে পারে না। কারণ, মুসলমান শান্তির ধর্ম ইসলাম-এ বিশ্বাসী।
আর ইসলাম-এ বিশ্বাসী মানুষ
দুর্নীতিগ্রস্ত হতে পারে না।
দয়া-মমতাহীন হতে পারে না।
পরের হক নষ্ট করতে পারে না।
নৈতিকতাবিহীন কাজে মশগুল হতে পারে না।
নারীর প্রতি আগ্রাসী হতে পারে না।
নারীর প্রতি অসম্মান দেখাতে পারে না।
মুহতারাম,
তারপরেও তা হচ্ছে। অথচ এ প্রেক্ষাপটে নিত্যনতুন আইনও হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও সুফল মিলছে না।
মুহতারাম,
এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, এদেশের শতকরা ৯৭ ভাগ মুসলমানকে তাদের দ্বীন ইসলামের ভিত্তিতে উজ্জীবিত করা হচ্ছে না। ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি আকর্ষিত করা হচ্ছে না। ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হচ্ছে না।
মুহতারাম,
এদেশের ৯৭ ভাগ অধিবাসীদের দ্বীন ইসলাম-এর মূল শিক্ষা এবং প্রধান মূল্যবোধ হলো- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন। কারণ, যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করা না হলে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনিসহ কোনো নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হতো না এবং উনাদের বিশেষ কোনো ঘটনাও সংঘটিত হতো না।
শুধু তাই নয়, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন না হলে- আসমান-যমীন, লওহো-কলম, আরশ-কুরসী, জিন-ইনসান, ফেরেশতা, বেহেশত-দোযখ এক কথায় কায়িনাতের কোনো কিছুই সৃষ্টি হতো না।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন- “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনাকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য না থাকলে আমি আমার রুবুবিয়্যতই প্রকাশ করতাম না।” (কানযুল উম্মাল)
তাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে আগমন তথা বিলাদত শরীফ ও বিছাল শরীফ-এর দিন ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ কতো মহান, কতো বড় খুশি বা ঈদের দিন হবে তা ভাষায় বর্ণনার অযোগ্য। আর সে দিনটি উপলক্ষে যদি যথাযথ আড়ম্বর, জাঁকজমক ও সর্বোচ্চ আয়োজনের সাথে খুশি প্রকাশ না করা হয়; তাহলে যে কতো কঠিন শাস্তির বিষয় হবে, তা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়।
সঙ্গতকারণেই ইসলামী শরীয়ত এ দিনটিকে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর বলে ঘোষণা করেছে এবং এ ঈদ পালন বা উদযাপন করাকে ফরযে আইন করে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় অনুগ্রহ ও রহমত হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্যে তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা সেসব কিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” (সূরা ইউনুস/৫৮)
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, হযরত জিবরীল আমীন আলাইহিস সালাম তিনি আমার নিকট আগমন করে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এই বলে পাঠিয়েছেন যে, “আপনি যদি না হতেন তবে আমি জান্নাত ও জাহান্নাম কিছুই সৃষ্টি করতাম না।” (দায়লামী, কানযুল উম্মাল)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মাখলূকাত সৃষ্টি করেছেন তথা মহান আল্লাহ পাক উনার রুবুবিয়্যতই প্রকাশ করেছেন মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করার উদ্দেশ্যে।
মুহতারাম,
এদেশের ৯৭ ভাগ অধিবাসী মুসলমান। এদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। আর মুসলমান বা ইসলামের মূলকথা হলো- “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”
বলাবাহুল্য, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ আদৌ উচ্চারিত হতো না, যদি- ‘মুহম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উচ্চারণ না হতো।
অর্থাৎ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দ্বীন ইসলামের মূল হচ্ছেন- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।
আর উনার প্রতি সব আবেগ, মুহব্বত, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, আদব জানানোর মূল মাধ্যম হচ্ছে উনার আগমনের দিন- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ যথাযথভাবে পালন।
মুহতারাম,
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ-এর শান ও মান
স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই
তিনি এদিনে সরকারি ছুটির ব্যবস্থা করেছেন। বঙ্গভবনে মীলাদ শরীফ পাঠের ব্যবস্থা করেছেন।
এবং এ ধর্মীয় বিশ্বাস ও চেতনা থেকেই স্বাধীনতা উত্তরকাল হতেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সব স্কুল-কলেজে
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তথা ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ পালন করা হয়।
কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, হামদে বারী তায়ালা, নাতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রচনা প্রতিযোগিতা, মীলাদ শরীফ পাঠ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়।
মুহতারাম,
সেক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিতে আপনিসহ সব সংসদ সদস্যদের আশু কর্তব্য,
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তথা ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ দিবসটি যথাযথভাবে পালনের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সর্বাধিক আয়োজন করা। প্রসঙ্গে আইন প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়া।
বৎসরের সর্বশ্রেষ্ঠ এ মুবারক দিনটি সর্বোত্তমভাবে পালনের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তথা আলাদা বাজেট বরাদ্দ, মাসব্যাপী সারাদেশে অনুষ্ঠান পালন এবং ছুটি ঘোষণার জন্য আইন প্রণয়ন করা প্রসঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করা।
পাশাপাশি সম্ভাব্য আগামী ৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে এদিনের গুরুত্ব, ভাবমর্যাদা রক্ষার্থে সব অনৈসলামী কাজ বন্ধ করনে জোরালো ভূমিকা রাখা।
এবং মূলত এ দিনের সম্মানে সব হারাম কাজ বন্ধ করে সর্বাত্মকভাবে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান ফুটিয়ে তোলা। উনার প্রতি মুহব্বত প্রকাশ করা। উনার আদর্শ অনুসরণ করা। সুন্নতসমূহ পালন করা।


মুহতারাম,
মহাজোটের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ২৩(১) অনুচ্ছেদে বর্ণিত ছিলো, “কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস হবে না”।
পাশাপাশি আরো উল্লেখ ছিলো,
“সব ধর্মের শিক্ষা ও মূল্যবোধের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে।”
মুহতারাম,
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে উল্লেখ্য যে, ৯৭ ভাগ দেশবাসী মুসলমানের ধর্ম বা দ্বীন- ‘ইসলাম’-এর শিক্ষা ও মূল্যবোধ হলো-
সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা, আবেগ ও অনুভূতি দিয়ে সর্বাধিক ব্যয় করে সবচেয়ে প্রাধান্য ও গুরুত্ব এবং মহা আড়ম্বর ও জাঁকজমকের সাথে
‘সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ,
সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম,
সাইয়্যিদে ঈদে আকবর
পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ’ সরকারি ও বেসরকারিভাবে পালন করা।
সঙ্গতকারণেই আপনাদের সরকারের উচিত-
এ বিষয়ে যথাযথ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূর্ণভাবে পূরণ করা।
৯৭ ভাগ অধিবাসী মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করা।
ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা।
ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করুন। তাওফীক দান করুন। গায়েবী মদদ করুন। (আমীন)

নিবেদক
আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম
সম্পাদক- দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত
কেন্দ্রীয় আহবায়ক- আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত, বাংলাদেশ।
(রাজাকার, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ বিরোধী ও ধর্মব্যবসায়ীদের মুখোশ
উন্মোচনকারী সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি দ্বীনী মজলিস।)


তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © দৈনিক আল ইহসান | দৈনিক আল ইহসান.

Uswatun Hasanah

Saieedul Aaiyad

0 comments:

Post a Comment

Pages (105)123456789 Next