বান্দা যত ইবাদত করে থাকে তন্মধ্যে যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের ইবাদত মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয়।


মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা (হজ্জ ও কুরবানীর) নির্দিষ্ট কয়েক দিন মহান আল্লাহ পাক উনাকে স্মরণ করো।
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর তাকবীর বলবে-
‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য ফতওয়া হলো- পুরুষ হোক, মহিলা হোক, মুক্বীম হোক, মুসাফির হোক, একা হোক বা জামায়াতে হোক প্রত্যেকের জন্য প্রতি ফরয নামাযের পর একবার তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব আর তিনবার পাঠ করা সুন্নত।
যারা এর ব্যতিক্রম বলে তাদের কথা সম্পূর্ণ অশুদ্ধ ও দলীলবিহীন।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তাকবীরে তাশরীকের উৎপত্তি ইতিহাস সম্পর্কে বলা হয়, মহান আল্লাহ পাক উনার খলীল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করলেন, হে বারে ইলাহী! আমাকে একজন নেক সন্তান দান করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে একজন ধৈর্যশীল সন্তানের সুসংবাদ দান করেন। অর্থাৎ হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সুসংবাদ দান করেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইহুদীরা বলে ও প্রচার করে থাকে যে, ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার ছেলে হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী করেছিলেন।’ মূলত তাদের এ মতটি সম্পূর্ণই মিথ্যা, বানোয়াট ও দলীলবিহীন। নির্ভরযোগ্য সমস্ত কিতাবেই উল্লেখ আছে যে, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী করেছেন। কেননা, হাদীছ শরীফ-এ স্পষ্টই উল্লেখ আছে, ‘আমি দুই যবেহের সন্তান।’ অর্থাৎ একজন হচ্ছেন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি আর অন্যজন হচ্ছেন হযরত খাজা আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম। কেননা, হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার পূর্বপুরুষ নন। পূর্বপুরুষ হচ্ছেন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদত লাভ করলেন এবং যখন হাঁটাহাঁটির বয়সে উপনীত হলেন তখন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে মিনায় নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘হে আমার প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি আপনাকে যবেহ বা কুরবানী করছি। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?’ হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি জবাব দেন, ‘হে আমার সম্মানিত পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তা বাস্তবায়িত করুন। ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’ সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি যখন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক-এ ছুরি চালাতে থাকেন; মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত! যতই ছুরি চালানো হচ্ছে হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক কিন্তু কাটছে না। সুবহানাল্লাহ! হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ছুরির ধার পরীক্ষা করার জন্য ছুরিটি একটি পাথরে আঘাত করলেন। সাথে সাথে পাথরটি দ্বিখন্ডিত হয়ে গেলো। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে ছুরি! তুমি পাথরকে দ্বিখন্ডিত করে দিলে অথচ হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক কাটতে পারছো না? মহান আল্লাহ পাক তিনি ছুরির যবান খুলে দেন। ছুরি বললো, ‘হে আল্লাহ পাক উনার খলীল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনি একবার কাটার জন্য আদেশ করেন আর আমার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সত্তরবার কাটতে নিষেধ করছেন। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যাই হোক হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে যবেহ করার চেষ্টায় নিয়োজিত ছিলেন ঠিক এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বেহেশত থেকে একটি দুম্বা এনে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার নিকট দেয়ার নির্দেশ দিলেন।
হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি যখন দুম্বা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলেন দেখলেন, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার প্রাণাধিক প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক-এ ছুরি চালাচ্ছেন। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম আশ্চর্যান্বিত হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার বড়ত্ব, মহত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে বলে উঠলেন, ‘আল্লাহ আকবার, আল্লাহু আকবার।’ একথা বলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে সরিয়ে ছুরির নিচে দুম্বাটি দিয়ে দিলেন। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে তখন তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে বললেন, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার’।
এদিকে হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনিও যখন বুঝতে পারলেন যে, তিনি যবেহ না হয়ে উনার পরিবর্তে একটি দুম্বা যবেহ হচ্ছে তিনিও তখন মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা করে বললেন, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ শরীয়তে এটাই তাকবীরে তাশরীক নামে মশহুর।’

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা শরীয়তের নির্দেশ। পুরুষ হোক, মহিলা হোক, মুক্বীম হোক, মুসাফির হোক, একা হোক বা জামায়াতে হোক প্রত্যেকের জন্য প্রত্যেক অবস্থায় প্রতি ফরয নামাযের পর একবার তাকবীর পাঠ করা ওয়াজিব আর তিনবার পাঠ করা সুন্নত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কেউ কেউ বলে ‘তাকবীর’ একবার পাঠ করতে হবে; তিনবার পাঠ করা যাবে না- তাদের কথা সম্পূর্ণ অশুদ্ধ ও দলীলবিহীন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সর্বজনমান্য এবং স্বীকৃত ইমাম-মুজতাহিদ ও ফুক্বাহায়ে কিরামগণ উনাদের বিশ্ব বিখ্যাত ফতওয়ার কিতাবে একাধিকবার তাকবীরে তাশরীক বলা মুস্তাহাব বা ফযীলতের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন, “দুররুল মুখতার” কিতাবে উল্লেখ আছে যে, “তাকবীরে তাশরীক একবার বলা ওয়াজিব, তবে যদি (কেউ) একাধিকবার বলে, তাহলে তা ফযীলতের কারণ হবে।” আর “ফতওয়ায়ে শামীতে” উল্লেখ আছে, “কেউ কেউ বলেছেন (তাকবীরে তাশরীক) তিনবার।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, “গায়াতুল আওতার”, “শরহে দুররুল মুখতার” কিতাবে উল্লেখ আছে, “বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে (আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে) আদিষ্ট হওয়ার কারণে একবার তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। আর যদি একবারের চেয়ে অতিরিক্ত বলে তবে সওয়াবের অধিকারী হবে।” “মুলতাক্বাল আবহুর” কিতাবে উল্লেখ আছে, যদি “তাকবীরে তাশরীক” একাধিকবার বলে তাহলে তা নফল হবে। “মারাকিউল ফালাহ” কিতাবের ৩৫১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “সাধারণভাবে একাধিকবার “তাকবীরে তাশরীক পড়া মুস্তাহাব।” “শরহে নেকায়া” কিতাবের ৩০৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “তাকবীরে তাশরীক একবার পাঠ করা ওয়াজিব। আর একাধিকবার পাঠ করা মুস্তাহাব।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূল ফতওয়া হলো- যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা শরীয়তের নির্দেশ। পুরুষ হোক, মহিলা হোক, মুক্বীম হোক, মুসাফির হোক, একা হোক বা জামায়াতে হোক প্রত্যেক অবস্থায় প্রতি ফরয নামাযের পর একবার তাকবীর পাঠ করা ওয়াজিব আর তিনবার পাঠ করা মুস্তাহাব-সুন্নত।

তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © দৈনিক আল ইহসান | দৈনিক আল ইহসান.

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment