আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বেশি বেশি মুহব্বত করা এবং উনাদের বেশি বেশি ছানা-সিফত করা


নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, আমার আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য।
আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ-এর মাস হচ্ছে ছফর মাস। অর্থাৎ তিনি ২৮শে ছফর শাহাদাত বরণ করেন।
তাই সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে- এ মাসে আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেশি বেশি মুহব্বত প্রকাশ করা এবং বেশি বেশি ছানা-সিফত করা। যা ইহকালে মর্যাদা হাছিল ও পরকালে জান্নাত লাভ করার কারণ।

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের মর্যাদা সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন, (হে বিশ্ববাসী)! আমি তোমাদের নিকট নুবুওওয়াতের দায়িত্ব পালনের কোনো প্রতিদান চাই না। তবে আমার আত্মীয়-স্বজন উনাদের তথা বংশধর উনাদের সাথে সদাচরণ করবে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি ‘তাফসীরে ইবনে হাতেম, ইবনে কাছির, মাযহারী, ইত্যাদি কিতাবের বরাত দিয়ে বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশধারা হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম উনি ও উনার আওলাদদ্বয় হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মাধ্যমে বিশ্বময় জারি রয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন বেহেশতের যুবকদের সাইয়্যিদ।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যারা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের বংশধর বা আওলাদ উনারাই আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম বা আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম করা এবং উনাদের খিদমত করা, উনাদের সাওয়ানেহ উমরী জানা সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হযরত ইমাম হাসান বিন আলী বিন আবী তালিব আলাইহিস সালাম তিনি কুরাইশ বংশের হাশেমী শাখায় বিলাদত শরীফ লাভ করেন। হিজরী ৩য় সনে রমাদ্বান মাসের ১৫ তারিখে, অন্য বর্ণনায় শা’বান মাসের ১৫ তারিখ হযরত হাসান আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন: যখন হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে তাশরীফ আনেন এবং ইরশাদ করেন: আমার সন্তানকে আমাকে দেখাও, উনার কী নাম রেখেছো? আমি বললাম: আমি উনার নাম রেখেছি- হারব (যুদ্ধ)। তিনি ইরশাদ করলেন: বরং সে হাসান। অর্থাৎ উনার নাম মুবারক হযরত হাসান আলাইহিস সালাম।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, উনার জিসিম মুবারক হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সর্বাপেক্ষা বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম তিনি অপেক্ষা অপর কেউ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অধিকতর সাদৃশ্যপূর্ণ ছিলেন না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, অনেক সময় আখিরী নবী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে সওয়ারী হয়ে হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদেরকে পিঠ মুবারক-এ চড়াতেন এবং বলতেন, ইনারা আল্লাহ পাক উনার নিকট শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি। উনাদের সাথে মুহব্বত রাখা পরকালে নাজাতের কারণ এবং উনাদের সাথে শত্রুতা করা পথভ্রষ্টতা ও গুমরাহীর কারণ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হযরত আদী বিন ছাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি হযরত বারা’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে শুনেছি, তিনি বলেন: আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র কাঁধ মুবারক-এর উপর হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনাকে দেখেছি। আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করে, সে যেনো ইনাকে (হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনাকে) মুহব্বত করে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হিজরী ৪০ সনের রমাদ্বান মাসে হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম তিনি খলীফা মনোনীত হলেন। চল্লিশ হাজার লোক উনার হাত মুবারক-এ বাইয়াত হন। তিনি খিলাফতের দায়িত্ব ৬ মাস পর্যন্ত পালন করেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘আমার পরে খিলাফত ৩০ বৎসর।’ তন্মধ্যে ২৯ বৎসর ৬ মাস পূর্ববর্তী খলীফাগণ উনাদের সময়ে অতিবাহিত হয়। বাকি ৬ মাস হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম তিনি পূর্ণ করেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মারাত্মক বিষক্রিয়ার কারণে ৪৯ হিজরী সনের ২৮শে ছফর প্রায় ৪৬ বৎসর বয়স মুবারক-এ তিনি শাহাদাত বরণ করেন বা বিছাল শরীফ লাভ করেন। হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনাকে পবিত্র জান্নাতুল বাক্বীতে সমাহিত করা হয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম তথা খাছ আওলাদ হচ্ছেন- হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম। যারাই উনার মুবারক শাহাদাতের সাথে জড়িত ছিলো শরীয়তের দৃষ্টিতে তারা সকলেই কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী।
কাজেই, আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ-এর মাস হচ্ছে ছফর মাস। তাই সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, এ মাসে বেশি বেশি আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা এবং উনাদের বেশি বেশি ছানা-সিফত করা এবং এর মাধ্যমে ইহকালে মর্যাদা-মর্তবা ও পরকালে জান্নাত লাভ করা। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দী হাছিল করা।

সূত্র: দৈনিক আল ইহসান (৯ জানুয়ারী, ২০১১)

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment