আশূরা ও আক্বাইদ


আরবী (হিজরী) বছরের প্রথম মাস হচ্ছে মুহর্‌রম মাস। এই মুহর্‌রম মাসের ১০ তারিখ হচ্ছে আশূরা। আশূরার নামকরণের ব্যাপারে উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ বিভিন্ন মত পোষণ করেন। তবে অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিম বলেন যে, এ দিনটি মুহর্‌রম মাসের ১০ তারিখ বলেই এটার নাম ‘আশূরা’ হয়েছে। কোন কোন আলিম বলেন যে, আল্লাহ পাক উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে দশটি বুযূর্গ দিন উপহার দিয়েছেন, তন্মধ্যে আশূরার দিনটি ১০ম স্থানীয়। এ কারণেই এটার নাম ‘আশূরা’ রাখা হয়েছে। আবার কারো মত এই যে, এই দিনটিতে যেহেতু আল্লাহ পাক স্বীয় দশজন নবীকে ১০টি ভিন্ন ভিন্ন রহমত বর্ষণ করেছেন তাই এটার নাম আশূরা হয়েছে। আবার কারো মত এই যে, দিনটিতে যেহেতু আল্লাহ পাক স্বীয় ১০ জন নবীকে দশটি ভিন্ন ভিন্ন রহমত দান করেছিলেন, তাই এটার নাম হয় ‘আশূরা’। এ আশূরার দিন- (১) হযরত আদম আলাইহিস সালাম-এর দোয়া কবুল হয়েছে। (২) হযরত ইদ্‌রীস আলাইহিস সালামকে সম্মানিত উচ্চস্থানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল। (৩) হযরত নূহ আলাইহিস্‌ সালাম-এর নৌকা জুদী পাহাড়ের সাথে গিয়ে ঠেকেছিল। (৪) হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর বিলাদত শরীফ, খলীল উপাধি লাভ এবং নমরূদের অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তিলাভ করেছিলেন। (৫) হযরত দাঊদ আলাইহিস সালাম-এর দুয়া কবুল এবং উনার পুত্র হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম-এর বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ব প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। (৬) হযরত আউয়ুব আলাইহিস সালাম-এর রোগ নিরাময় হয়েছিল। (৭) আল্লাহ পাক ফিরাউনকে সদলবলে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মেরেছিলেন এবং হযরত মুসা আলাইহিস সালাম সহজেই লোহিত সাগর পার হয়েছিলেন। (৮) হযরত ইউনূছ আলাইহিস্‌ সালাম মাছের পেট হতে মুক্তি লাভ করেছিলেন। (৯) হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে এবং (১০) আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম-এর ইছমত ঘোষণা করা হয়েছিল।
এছাড়াও এই আশূরার সাথে হযরত হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত-এর ঘটনা জড়িত। অথচ এই আশূরা আসলেই আমাদের দেশে কিছু নিম মোল্লা তাদের কিল্লতে ইল্‌ম কিল্লতে ফাহম অর্থাৎ কম জ্ঞান কম বুঝের কারণে মুসলমানদের মাঝে আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত-এর বিপরীত, কুফরী আক্বীদা ছড়িয়ে থাকে। তারা নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণকে দোষারোপ করে বলে থাকে অমুক নবী অমুক ভূল করেছে, অমুক নবী তমুক ভূল করেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক) অথচ আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত-এর আক্বীদা হলো “সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণ মাছুম বা নিষ্পাপ।” আবার তারা হযরত হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত-এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাতিবে ওহী হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে দোষারোপ করে থাকে, তাঁকে “রাজতন্ত্র ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা” বলে থাকে। (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক) অথচ আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত-এর আক্বীদা হলো “সমস্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ মাহফুজ বা সংরক্ষিত।”
এখানে উল্লেখ্য যে, আল্লাহ্‌ পাক-এর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারীদেরকে “রাবী” বলা হয়। এই রাবীগণের মধ্যে যাঁরা প্রথম শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত, তাঁদেরকে বলা হয় “ছেক্বাহ্‌ রাবী।” হাদীছ শরীফ বিশারদগণ (রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিম) “ছেক্বাহ রাবী” হওয়ার জন্য যে মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন, তার মধ্যে মূল বিষয় হচ্ছে- (১) আদালত ও (২) জব্‌ত।
“জব্‌ত” হলো প্রখর স্মরণশক্তি যা একবার শুনলে আর কখনো ভুলে না। আর “আদালত”-এর মধ্যে চারটি শর্ত। তার মধ্যে প্রধান দু’টি হলো (ক) তাক্বওয়া, (খ) মুরুওওয়াত।
(ক) “তাক্বওয়া” হচ্ছে কুফরী, শেরেকী, বিদ্‌য়াতী, ফাসিকী কাজ থেকে বেঁচে থাকার সাথে সাথে কবীরা গুনাহ থেকে এমনকি ছগীরা গুনাহও বার বার করা থেকে বেঁচে থাকা।
(খ) “মুরুওওয়াত” হচ্ছে অশালীন, অশোভনীয়, অপছন্দনীয় এমনকি দৃষ্টিকটু কাজ থেকে বিরত থাকা। যেমন- রাস্তায় হেঁটে-হেঁটে খাদ্য খাওয়া, রাস্তায় অট্টহাস্য করা, চিৎকার করা ইত্যাদি।
আরো উল্লেখ্য যে, হাদীছ শরীফ বিশারদগণ (রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিম) তাদের বর্ণিত হাদীছকে “মওজূ” বা বানোয়াট বলে সাব্যস্ত করেছেন, যারা জীবনে একবার মাত্র ইচ্ছাকৃতভাবে হাদীছ শরীফ-এর ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। আর যারা জীবনে ব্যক্তিগতভাবে মিথ্যা বলেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে তাদের বর্ণিত হাদীছ শরীফকে “মতরুক” বা পরিত্যাজ্য বলে সাব্যস্ত করেছেন। (তাদরীবুর রাবী, মুকাদ্দামাতুশ শায়খ, মীযানুল আখবার)
এখন ফিকিরের বিষয় এই যে, হাদীছ শাস্ত্র বিশারদগণ (রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিম) আল্লাহ্‌ পাক-এর বান্দা ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত, এমনকি তাঁরা কোন দিন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের সমমর্যাদার অধিকারীও হতে পারবেনা, তা সত্ত্বেও তাঁদের মতে আল্লাহ্‌ পাক-এর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করার ক্ষেত্রে রাবীগণকে “বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী বা ছেক্বাহ রাবী” হিসেবে মনোনীত বা চিহ্নিত করতে ছেক্বাহ রাবীর যদি এত শর্ত-শারায়েত ও যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, অর্থাৎ যদি কেউ জীবনে একবার মিথ্যা বলে তাহলে ছেক্বাহ রাবী হওয়া তো দূরের কথা তার কোন হাদীছই গ্রহণযোগ্য নয় বলে শর্তারোপ করা হয়েছে। এরপর ছগীরা গুণাহ্‌ তো দূরের কথা যা সাধারণ মুরুওয়াতের খিলাফ, যেমন রাস্তায় হেঁটে হেঁটে যদি কেউ খাদ্য খায় সেও ছেক্বাহ্‌ রাবীর অন্তর্ভূক্ত হতে পারে না। তবে যিনি হাদীছ বিশারদগণ (রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিমগণ) সকলেরই রব ও খালিক, তিনি তাঁর পবিত্র কালাম বর্ণনা করা বা পৌঁছে দেয়া বা ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে যাঁদেরকে নবী ও রসূল (আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালাম) হিসেবে মনোনীত করেছেন, তাঁদের জন্য কি মানদন্ড নির্ধারণ করেছেন বা কতটুকু শর্তারোপ করেছেন? তাঁদেরকে কতটুকু যোগ্যতা দান করেছেন? আর তাঁরা কতটুকু মা’ছূম হওয়া শর্তারোপ করেছেন? আর ছেক্বাহ্‌ রাবীর তুলনায় তাঁদের কত বেশী যোগ্যতা, মা’ছূম ও নিষ্পাপ হওয়া প্রয়োজন? বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, আম্বিয়া আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামগণ ছেক্বাহ্‌ রাবীগণের চেয়েও বহু বহু গুণে যোগ্যতা সম্পন্ন ও মা’ছূম। অতএব, তাঁদের দ্বারা ভুল-ত্রুটি, গুণাহ্‌ ইত্যাদি প্রকাশ পাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। ঠিক একইভাবে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ, যাঁরা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর নাযিলকৃত কুরআন শরীফ পরবর্তী উম্মতদের নিকট পৌঁছে দেয়ার জন্য আল্লাহ্‌ পাক কর্তৃক মনোনীত হয়েছেন, তাঁদের জন্য আল্লাহ্‌ পাক কি মানদন্ড নির্ধারণ করেছেন বা কতটুকু শর্তারোপ করেছেন? তাঁদেরকে কতটুকু যোগ্যতা দান করেছেন? আর তাঁরা কতটুকু মাহফুজ হওয়া শর্তারোপ করেছেন? আর ছেক্বাহ্‌ রাবীর তুলনায় তাঁদের কত বেশী যোগ্যতা, মাহফুজ ও সংরক্ষিত হওয়া প্রয়োজন? বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ছেক্বাহ্‌ রাবীগণের চেয়েও বহু গুণে যোগ্যতা সম্পন্ন ও মাহফুজ। অতএব, তাঁদের দোষারোপ করা করা কোন ভাবেই বৈধ নয়।
এখন নিম মোল্লারা প্রশ্ন করতে পারে যে, নবী ও রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামগণ যদি মা’ছূম হয়ে থাকেন তাহলে কুরআন শরীফ-এর তাঁরা গুণাহ্‌-খতা করেছেন বা তওবা করেছেন বলে আয়াত শরীফ নাযিল হলো কেন? মূলতঃ তাদের আক্বল-সমঝের চরম ঘাটতির কারণে তারা এ ধরণের কথা বলতে পারে। কুরআন শরীফ-এ যে আয়াত শরীফগুলোতে গুণাহ্‌-খতা করেছেন বা তওবা করেছেন বলে উল্লেখ আছে যে সমস্ত আয়াত শরীফগুলোর সরাসরি অর্থ করা হারাম। যেমন আল্লাহ্‌ পাক সূরা আলে ইমরান-এর ৫৪তম আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
مَكَرُوْا وَمَكَرَ اَللهُ وَاَللهُ خَيْرُ الْمَاكِرِيْنَ٭
আয়াত শরীফ-এ ব্যবহৃত “মকর” (مَكَر) শব্দের অর্থ হচ্ছে ধোকা, যা সকল অভিধানে উল্লেখ আছে। সে হিসেবে উক্ত আয়াত শরীফ-এর অর্থ দাঁড়ায়- “তারা (কাফিররা) ধোকাবাজী করলো, আল্লাহ পাকও ধোকাবাজী করলেন, আল্লাহ পাক সর্বত্তোম ধোকাবাজ।” (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক)
আল্লাহ্‌ পাক-এর শান-এ এই অর্থ করলে ঈমান থাকবে কি? থাকবে না। আর তাই এর অর্থ ঘুরিয়ে করতে হবে, যা আল্লাহ্‌ পাক-এর শান-মান সম্মত। সেজন্য আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত-এর ইমাম-মুজতাহিদ রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি উক্ত আয়াত শরীফ-এর অর্থ করেছেন- “তারা (কাফিররা) ধোকাবাজী করলো, আল্লাহ পাক প্রজ্ঞা অবলম্বন করলেন, আল্লাহ পাক সর্বত্তোম প্রজ্ঞা অবলম্বনকারী।”
এখানে আল্লাহ পাক-এর শান-এ “মকর” (مَكَر) শব্দের শাব্দিক অর্থ গ্রহন করলে সুস্পষ্ট কুফরী হয় বিধায় তাঁর শান-এ “মকর” (مَكَر) শব্দের অর্থ গ্রহন করা হয়েছে সর্বত্তোম প্রজ্ঞা অবলম্বনকারী। ঠিক একইভাবে নবী-রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামগণ-এর শান-এও এমন অর্থ গ্রহণ করতে হবে, যাতে তাঁদের শান-মান-এর খিলাফ না হয়। যেমন সূরা ত্ব-হা-এর ১২১তম আয়াত শরীফ-এ আল্লাহ্‌ পাক হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
وَعَصَى آدَمُ رَبَّهُ فَغَوَى
আবার, কুরআন শরীফ-এর অন্যত্র (সূরা নাযিয়াত ২১) আল্লাহ্‌ পাক ফিরাউন সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
فَكَذَّبَ وَعَصَى
আয়াত শরীফদ্বয়ে ব্যবহৃত আ’ছা (عَصٰي) শব্দের অর্থ হচ্ছে নাফরমানী করা, যা সকল অভিধানে উল্লেখ আছে। সে হিসেবে ফিরাউন সম্পর্কে ইরশাদকৃত আয়াত শরীফ-এ ব্যবহৃত আ’ছা (عَصٰي) শব্দের যে অর্থ হবে হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম সম্পর্কে ইরশাদকৃত আয়াত শরীফ-এ ব্যবহৃত আ’ছা (عَصٰي) শব্দের একই অর্থ হয় কি করে? আল্লাহ্‌ পাক-এর খলীফা ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম ও আল্লাহ্‌ পাক-এর শত্রু ফিরাউন কি করে একই মর্যাদাসম্পন্ন হতে পারে? কোন দিনই পারে না। যে বা যারা একই অর্থ করবে তারা কোন দিনই মুসলমান হতে পারেনা, তারা কাট্টা কাফির।
এমনিভাবে নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালাম তওবা করেছেন বলে যেসব আয়াত শরীফ-এ উল্লেখ আছে, সেসব আয়াত শরীফ-এরও অর্থ ঘুরিয়ে তাঁদের শান-মান অনুযায়ী করতে হবে। যেমন আল্লাহ্‌ পাক সূরা আরাফ-এর ২৩তম আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম আল্লাহ্‌ পাক-এর দরবারে দু’য়া করলেন-
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
আবার, সূরা আম্বিয়া-এর ৮৭তম আয়াত শরীফ-এ আল্লাহ্‌ পাক ইরশাদ করেন, হযরত ইউনূছ আলাইহিস্‌ সালাম মাছের পেটে থেকে আল্লাহ্‌ পাক-এর দরবারে দু’য়া করলেন-
لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
আল্লাহ্‌ পাক কাফিরদের সম্পর্কেও “জালিম” (ظَالِمْ) শব্দটি কুরআন শরীফ-এর বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করেছেন। এখন হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম এবং হযরত ইউনূছ আলাইহিস্‌ সালাম-এর শান-এ ব্যবহৃত “জালিম” (ظَالِمْ) শব্দটি এবং কাফিরদের সম্পর্কে ব্যবহৃত “জালিম” (ظَالِمْ) শব্দটির একই অর্থ হবে কি? কস্মিনকালেও নয়। অনুরূপভাবে কুরআন শরীফ-এ ব্যবহৃত যে শব্দগুলো আম্বিয়া আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামগণের শান-এর খিলাফ হয়, সে শব্দগুলোর অর্থ তাঁদের শান-মান অনুযায়ী করতে হবে। অন্যথায় ঈমান থাকবে না, কাট্টা কাফির হতে হবে।
আবার এটাও বলতে হয় যে, আল্লাহ্‌ পাক-এর সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামগণ যেখানে আল্লাহ্‌ পাক-এর পক্ষ থেকে প্রেরিত ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, সেখানে তাঁদের ভূল হয় কি করে? বরং তাঁরা ভূল করেছেন বলার অর্থ হলো ওহীতে ভূল ছিল বলা, যার অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহ্‌ পাক ভূল করেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক)
সুতরাং সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, নবী-রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামগণের দ্বারা কখনই কোন প্রকার ভূল-ত্রুটি করা সম্ভবপর নয়। আর এটিও প্রমাণিত হলো যে, যে সমস্ত নামধারী মুফাস্‌সিরে কুরআন, মুহাদ্দিছ, শায়খুল হাদীছ, ইমাম, খতীব তথা আলিম দাবীদার যারা নবী-রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামগণের শান-এর খিলাফ বক্তব্য প্রদান করে তারা কাট্টা কাফির।
কোন নবী-রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালামকে যেমন কোন ব্যাপারে দোষারোপ করা জায়িয নেই তদ্রুপ কোন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকেও কোন ব্যাপারে দোষারোপ করা জায়িয নেই। এ বিষয়ে আল্লাহ্‌ পাক তাঁর কালামে পাকে ইরশাদ করেন,
وَلا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى
অর্থঃ “একজনের পাপের বোঝা অপরজন বহন করবেনা।” (সূরা আনয়াম ১৬৪)
এ আয়াত শরীফ দ্বারা বুঝা যায় যে, সন্তানের অপরাধের জন্য পিতাকে এবং পিতার অপরাধের জন্য সন্তানকে দায়ী করা বৈধ নয়। যদি ইয়াযীদের অপরাধের জন্য হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে দায়ী বা দোষারোপ করা হয়, তাহলে কাবিলের জন্য হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম দোষী সাব্যস্ত হয়ে যান। (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক) একইভাবে কিনানের জন্য হযরত নূহ আলাইহিস্‌ সালামও দোষী সাব্যস্ত হয়ে যান। (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক) মূলতঃ হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন তাঁর ছেলে ইয়াযীদকে খলীফা নিযুক্ত করেন তখন ইয়াযীদ ভাল ছিল। কিন্তু মুনাফিকদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে পরবর্তীতে ইয়াযীদ গুমরাহ্‌ হয়ে যায়।
ঠিক একইভাবে, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর খিলাফতের পর তাঁর ছেলে খলীফা নিযুক্ত হওয়ায় যদি তাঁকে “রাজতন্ত্র ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা” বলা হয়। তাহলে আল্লাহ্‌ পাক-এর নবী ও রসূল হযরত দাউদ আলাইহিস্‌ সালাম যিনি ছিলেন খলীফাতুল্লাহ্‌ অর্থাৎ আল্লাহ্‌ পাক-এর খলীফা, তাঁর পর তাঁর ছেলে হযরত সুলাইমান আলাইহিস্‌ সালামকে আল্লাহ্‌ পাক সারা পৃথিবীর খলীফা নিযুক্ত করায়, আল্লাহ্‌ পাকই তো রাজতন্ত্র ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাকারী সাব্যস্ত হন। (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক) এছাড়া হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর পর তাঁর ছেলে হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও তো খলীফা নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাই বলে কি, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে রাজতন্ত্র ও রাজবংশ জারী হয়েছে? (নাঊযুবিল্লাহ্‌ মিন যালিক) মূলতঃ আল্লাহ্‌ পাক, হযরত নবী-রসূল আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস্‌ সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, আউলিয়ায়ে কিরাম রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিম কেউই রাজতন্ত্র ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নন। কেউ যদি তা বলে তবে সেটা হবে প্রকাশ্য তোহ্‌মত ও কুফরী।
আরো উল্লেখ্য যে, রাজতন্ত্র বা রাজবংশ ইসলামের অনেক পূর্বকাল থেকেই চলে আসছে। আর তাই আমরা হাদীছ শরীফ-এ দেখতে পাই যে, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ্‌ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোম, পারস্য, আবিসিনিয়া, চীন, মালাবার, গুজরাট ইত্যাদির সম্রাট বা রাজাদের নিকট ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়ে দূত মারফত পত্র পাঠিয়েছেন।
অতএব, সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রাজতন্ত্র বা রাজবংশ কোনটিরই প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন না। এছাড়া হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর পরবর্তী খলীফাগণের তালিকায় দেখা যায় ইয়াযীদের সাড়ে তিন বছর খিলাফতের পর ইয়াযীদের ছেলে দ্বিতীয় মুয়াবিয়া শুধুমাত্র তিন মাস খিলাফত পরিচালনা করতঃ ইন্তিকাল করেন। তিনি ইন্তিকালের সময় খিলাফত পরিচালনার ব্যাপারে ওছীহত করেন যে, আপনারা যাকে উপযুক্ত মনে করবেন তাকেই খলীফা নিযুক্ত করবেন। অতঃপর যে খলীফাগণ খিলাফত পরিচালনা করেছেন তাদের কেউই হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বংশধর ছিলেন না।
সুতরাং বুঝা গেল যে, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণের কারণেই এরূপ বক্তব্য প্রদান করা হয়। আর আল্লাহ্‌ পাক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ
অর্থঃ “কাফিররাই তাঁদের (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের) প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে।” (সূরা ফাতহ্‌ ২৯)
আর হাদীছ শরীফ-এও ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি হাবীবুল্লাহ্‌ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, সে কাফির।” (নাসীমুর রিয়ায)
এখানে একটি বিষয় মনে রাখা দরকার যে, আল্লাহ্‌ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদরের দৌহিত্র হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মর্মান্তিক শাহাদাত-এ মুসলিম উম্মাহ্‌র অন্তর ব্যাথাতুর হবে তা চরম সত্য কথা এবং এটা ঈমান মজবুতীর আলামতও বটে। কিন্তু এজন্য আল্লাহ্‌ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জলীলুল ক্বদর ছাহাবী হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে দোষারোপ করা কস্মিনকালেও শরীয়তসম্মত হতে পারে না। যারা হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে দোষারোপ করে তারা মূলতঃ তাঁর মহান মর্যাদা সম্পর্কে নিতান্তাই অজ্ঞ।
স্মরণযোগ্য যে, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছাহাবীগণের (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) মধ্যে একজন বিশেষ শ্রেণীর ছাহাবী যাঁকে উলুল আ’যম বা জলীলুল ক্বদর ছাহাবী বলা হয়। তিনি ছিলেন আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, কাতিবীনে ওহীর সদস্য, হাদীছ শরীফ-এর রাবী, ফক্বীহ ইত্যাদি মর্যাদার অধিকারী। তাঁর ইল্‌মের পূর্ণতা, হিদায়েতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা, তাঁর দ্বারা লোকদের হিদায়েত লাভ, কিতাব শিক্ষাদান এবং জাহান্নাম থেকে নিস্কৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্‌ পাক-এর নিকট দু’য়া করেছেন। এ প্রসঙ্গে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,“আমার উম্মতের প্রথম যে দল সমুদ্রের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তাঁদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব।” (বুখারী শরীফ)
হযরত ইমাম তারাবী রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ২৮ হিজরীতে সর্বপ্রথম সমুদ্র যুদ্ধের মাধ্যমে কাবরাসের উপর আক্রমণ করেন এবং কাবরাস তিনিই বিজয় করেন।” (তাবারী)
হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মর্যাদা-মর্তবার মধ্যে অন্যতম মর্যাদা হলো, তিনি ছিলেন একজন আদিল বা ইন্‌সাফগার খলীফা। তাঁর ন্যায় বিচার ও ইন্‌সাফ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয় যে, জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, “আমার দৃষ্টিতে হযরত উছমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, এরপর হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর চেয়ে অধিক ন্যায় বিচারক কেউ নেই।” (বিদায়া)
এক ব্যক্তি মুয়াফা ইবনে ইমরানকে বললো, ন্যায় বিচারের দিক দিয়ে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি-এর মধ্যে কি সম্পর্ক রয়েছে? একথা শুনে তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেন, “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের প্রতি কোন প্রকার ক্বিয়াস করা যাবে না। হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ছাহাবী, বৈবাহিক সূত্রে আত্মীয়, কাতিবে ওহী ও আল্লাহ্‌ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আমীন (আমানতদার)।” (নাসীমুর রিয়ায)
হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ফযীলত সম্পর্কে আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীছ হযরত আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে মুবারক রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, “হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শ্রেষ্ঠ? না হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি শ্রেষ্ঠ? তিনি বললেন, আল্লাহ্‌ পাক-এর কসম! হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ঘোড়ায় চড়ে জিহাদে যেতেন, তখন ঘোড়ার নাকে যে ধুলাবালিগুলো প্রবেশ করতো সে ধুলাবালিগুলোও হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি হতে বহুগুণে শ্রেষ্ঠ।” (ফতওয়ায়ে হাদীছিয়াহ্‌)
সুতরাং এত সকল মর্যাদা-মর্তবার পরও যারা হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তাদের জন্য ইমাম শিহাবুদ্দীন খাফ্‌ফাযী রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি-এর কথাই অধিক প্রযোজ্য। তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, গালি দেয়, নাকিস বলে, সমালোচনা করে, সে হাবিয়া দোযখের কুকুরসমূহের মধ্য হতে একটি কুকুর।” (নাসীমুর রিয়ায)
অতএব স্পষ্ট প্রমাণিত হলো যে, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শুধু ছাহাবীই ছিলেন না, বরং মর্যাদাপূর্ণ, জলীলুল ক্বদর, ন্যায়পরায়ণ একজন খলীফাও ছিলেন। আর আল্লাহ্‌ পাক হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুসহ সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম-এর প্রতি সন্তুষ্ট। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌ পাক ইরশাদ করেন,
رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ
অর্থঃ “আল্লাহ পাক তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট।” (সূরা মায়েদা ১১৯, সূরা তওবা ১০০, সূরা বাইয়্যিনাহ ৮)
কাজেই আশূরার দিনে সংঘটিত নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ-এর বরকতময় ঘটনা ও হযরত হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত-এর ঘটনা থেকে আমাদেরকে ইবরত-নছীহত গ্রহণের পাশাপাশি, এই বিষয়ে আমাদের আক্বীদাকেও শুদ্ধ করে নিতে হবে। আর তথাকথিত আলিমদের বদ সংশ্রব থেকে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লাহ্‌ পাক আমাদের সকলকে আক্বীদা শুদ্ধ করার এবং তথাকথিত আলিমদের বদ সংশ্রব থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। (আমিন)

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment