পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার এই নির্দেশ মুবারক স্পষ্ট প্রমাণ করে- সারা পৃথিবীতে একদিনে পবিত্র ঈদ পালন করা সম্ভব নয়।
যারা একদিনে পবিত্র ঈদ পালনের পক্ষে বলে থাকে তাদের পবিত্র শরীয়ত উনার সম্পর্কে ইলম এবং ভৌগোলিক জ্ঞান উভয়টিরই যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
তাদের উচিত খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী উনাদের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে যিকির ফিকির উনাদের মাধ্যমে তাদের সমঝের তীব্রতা বৃদ্ধি করা।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যারা সমগ্র বিশ্বে একদিনে পবিত্র ঈদ পালন করার দাবি তুলছে বা তুলে তারা আসলে ন্যূনতম ভূগোলের জ্ঞান এবং পবিত্র শরীয়ত উনার সম্পর্কিত ইলম বিবর্জিত মানুষ। হয় তারা আবেগ তাড়িত, যার কোনো মূল্য পবিত্র শরীয়ত উনাতে নেই। অথবা নিছক ফিতনা এবং মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে একটি অপকৌশল ব্যবহার করতে চাচ্ছে। যার মূলে রয়েছে, তাদের ইহুদী ও খ্রিস্টান মনীব।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র শরীয়ত উনার সীমালঙ্ঘন করে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের কথা বলে একদিনে রহমতপূর্ণ ঈদ পালন করতে চাইলে ভ্রাতৃত্ববোধ যেমনি গড়ে উঠবে না, তেমনি রহমতপূর্ণ ঈদ পালনও হবে না। তারা একদিনে পবিত্র ঈদ পালনের কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। দিন বলতে আমরা দু’রকম বুঝতে পারি, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের সময়কে দিন বলে আবার দিবা রাত্রি মিলিয়ে ২৪ ঘণ্টাকে দিন বলে। সৌরমাস এবং চন্দ্রমাস হিসেবেও দিন আবার দু’রকম। সৌরমাসের দিন শুরু হয় রাত ১২টা থেকে এবং তা থাকে পরবর্তী রাত ১২টা পর্যন্ত আবার চন্দ্রমাসে দিন শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে এবং তা থাকে পরবর্তী সন্ধ্যা পর্যন্ত। আবার একদিন বলতে একই তারিখ বা বার বোঝানো যেতে পারে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, অনেকে আবার সউদী আরবে চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে সারা পৃথিবীতে একদিনে পবিত্র ঈদ পালন করতে চায়। কিন্তু বাস্তবে এই একদিনে পবিত্র ঈদ পালন করা বা সউদী আরবের চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে সারা পৃথিবীতে একদিনে পবিত্র ঈদ করা সবই অজ্ঞতা, মূর্খতা ও হাস্যকর; যা অবাস্তব ও অবান্তর।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। সউদী আরবে চাঁদ দেখা গেলে সেই চাঁদ দেখা অনুযায়ী যারা সারা পৃথিবীতে একদিনে পবিত্র ঈদ পালন করতে চায় তাদের জন্য স্মরণীয়:
১৪১৯ হিজরীর শাওয়াল মাসের চাঁদ সউদী আরবে দেখা গিয়েছিলো সোমবার, ১৮ই জানুয়ারি। সেদিন অর্থাৎ ১৮ই জানুয়ারি, নিউজিল্যান্ডে সূর্য অস্ত যাওয়ার ১৩ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যায় এবং চাঁদের বয়স ছিল মাত্র ১৭ ঘণ্টা। নিউজিল্যান্ডে সেদিন চাঁদ দেখা যায়নি এবং দেখা যাওয়া ছিল অসম্ভব।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এখন আমাদের প্রশ্ন যদি সউদী আরবের চাঁদ দেখা অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডবাসীকে পবিত্র ঈদ করতে হয় তবে তারা কখন পবিত্র ঈদ পালন করবে?
যেদিন সউদী আরবে চাঁদ দেখা যায় তখন
স্থানীয় সময়: ৬টা ৩০ মিনিট
বার: ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ
তারিখ: ১৮ই জানুয়ারি, ১৯৯৯ ঈসায়ী।
সেদিন নিউজিল্যান্ডে-
সময়: ভোর ৪টা ৩০মিনিট
বার: ইয়াওমুছ ছুলাছায়ি বা মঙ্গলবার
তারিখ: ১৯শে জানুয়ারি, ১৯৯৯ ঈসায়ী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যদি সউদী আরবের সাথে পবিত্র ঈদ পালনকারীরা বলেন নিউজিল্যান্ডবাসীরা ভোর ৭টায় ঈদের নামায পড়বে তাহলে দেখা যাচ্ছে নিউজিল্যান্ডবাসীর পবিত্র ঈদ সউদী আরবের তারিখে হচ্ছে না। কেননা সউদী আরবে সেদিন ১৮ই জানুয়ারি আর নিউজিল্যান্ডে ১৯শে জানুয়ারি।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, একদিনে পবিত্র ঈদ পালনকারীদের যুক্তি অনুযায়ী ১৮ই জানুয়ারির রাতে নিউজিল্যান্ডবাসী মুসলমানরা তারাবীহর নামায পড়লেও, সাহরী খেলেও এসব আমল নষ্ট করে ৭টায় নামায পড়তে হবে যেহেতু সউদী আরবে সে সময় চাঁদ দেখা গেছে অথবা ১৯শে জানুয়ারির ভোরে যেহেতু সউদী আরব পবিত্র ঈদ পালন করবে সেই তারিখের সমতা রক্ষার জন্যেই কি চাঁদ দেখতে না পেলেও রোযার সব আমল নষ্ট করে নিউজিল্যান্ডবাসীকে পবিত্র ঈদ পালন করতে হবে?
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্দেশ রয়েছে ২৯তম দিনে চাঁদ দেখা না গেলে মাস ৩০ দিনে পূর্ণ করতে হবে। অথচ নিউজিল্যান্ডবাসী পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্দেশ অমান্য করে ৩০ দিনে পূর্ণ না করে সকালে নামায পড়লে তা কিসের অনুসরণ হবে? আর যদি বলা হয়, সউদী আরবের পবিত্র ঈদের দিন নামাযের পর নিউজিল্যান্ডবাসীকে পবিত্র ঈদের নামায পড়তে হবে তবে সউদী আরবে পবিত্র ঈদের দিনে যখন নামায অনুষ্ঠিত হয়েছে তখন নিউজিল্যান্ডে সময় ছিল বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট। সে সময় পবিত্র ঈদের নামায পড়া সম্ভব নয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে সউদী আরবের সাথে সমগ্র পৃথিবীতে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন করার যুক্তিটি অজ্ঞতা, মূর্খতা ও হাস্যকর।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলত যারা একদিনে পবিত্র ঈদ পালনের পক্ষে তাদের পবিত্র শরীয়ত উনার ইলম এবং ভৌগোলিক জ্ঞান উভয়টিরই যথেষ্ট অভাব রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী উনাদের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে যিকির ফিকির উনাদের মাধ্যমে তাদের সমঝের তীব্রতা বৃদ্ধি করা উচিত। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ কর। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” কাজেই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, পবিত্র রোযা ও পবিত্র ঈদসহ দ্বীন ইসলাম উনার প্রতিটি ইবাদত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নির্দেশ মুতাবিক পালন করা।
-০- তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
0 comments:
Post a Comment