সারা বৎসর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ছানা-ছিফত বর্ণনা করা ও উনাদের প্রতি মুহব্বত প্রকাশ করা।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, শান-শওকত সম্পর্কে অবগত হও। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হলেন- হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী।’
তাই সকল মুসলমানদের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে-
সারা বৎসর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ছানা-ছিফত বর্ণনা করা ও উনাদের প্রতি মুহব্বত প্রকাশ করা।

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সারা বৎসরই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত বর্ণনা করা ও উনাদের মুহব্বত প্রকাশ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আল্লাহ পাক উনার রসূল এবং উনার খাদিম বা ছাহাবী উনারা কাফিরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি উনাদেরকে রুকূ ও সিজদাবনত দেখবেন। উনাদের মুখম-লে রয়েছে সিজদার চিহ্ন। উনাদের এরূপ অবস্থা তাওরাত শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে। আর ইঞ্জীল শরীফ-এ উনাদের অবস্থা এরূপ বর্ণিত রয়েছে, যেমন একটি চারা গাছ, যা থেকে নির্গত হয় ডাল-পালা। অতঃপর তা শক্ত ও মজবুত হয় এবং দৃঢ়ভাবে কা-ের উপর দাঁড়ায়, কৃষককে আনন্দে অভিভূত করে। অর্থাৎ ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের সংখ্যা চারা গাছের অনুরূপ বৃদ্ধি পেতে থাকবে। যেমন উনারা শুরুতে অল্প সংখ্যক হবেন, এরপর উনাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং শক্তি অর্জিত হবে, যাতে উনাদের দ্বারা কাফিরদের অন্তর্জ্বালা বা হিংসার সৃষ্টি হয়। যারা ঈমান আনয়ন করে এবং নেক আমল করে আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের ওয়াদা দিয়েছেন। অর্থাৎ সমস্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের ওয়াদা দেয়া হয়েছে।” (সূরা ফাতহ-২৯)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এ আয়াত শরীফ-এ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের গুণাবলী, শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশেষ লক্ষণাদি বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও নুযূল খাছ তবে হুকুম হচ্ছে আম অর্থাৎ এতে সকল ছাহাবায়ে কিরাম উনারাই দাখিল রয়েছেন। অর্থাৎ সমস্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ছিলেন পরস্পর পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল আর কাফিরদের প্রতি কঠোর। আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই আক্বাইদ, ইবাদত, মুয়ামিলাত, মুয়াশারাত, তাছাউফ ইত্যাদি সবই করেছেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ হযরত ছাহাবা আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণ ও অনুকরণ এবং ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। “যে ব্যক্তি শরীয়তের সঠিক তরীক্বা অনুসরণ করতে চায়, তার উচিত যাঁরা অতীত হয়েছেন, উনাদেরকে অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয় ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণ করা। উনারা উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম। আত্মার দিক দিয়ে উনারা অধিক পবিত্র। ইলমের দিক দিয়ে গভীর। উনারা লোক দেখানো আমল করা হতে মুক্ত। আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্যে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথী হিসেবে মনোনীত করেছেন। সুতরাং, উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, শান-শওকত সম্পর্কে অবগত হও এবং উনাদের কথা ও কাজের অনুসরণ কর এবং যথাসম্ভব উনাদের সিরত-ছূরত তথা মুবারক জীবনাদর্শকে গ্রহণ কর, কারণ উনারা হিদায়েত ও ‘ছিরাতুল মুস্তাক্বীম’-এর উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত।” (মিশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ৩২)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও সন্তুষ্ট, উনাদেরকে আল্লাহ পাক তিনি জান্নাতী বলে কুরআন শরীফ-এ ঘোষণা করেছেন, উনাদের পথ ও মত অনুসরণকারীরাও নাজাতপ্রাপ্ত, উনাদেরকে আল্লাহ পাক তিনি অগাধ জ্ঞানের অধিকারী করেছেন, উনাদের যুগকে সর্বোত্তম যুগ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, উনাদের অকল্পনীয় ত্যাগ ও কষ্টের বিনিময়ে পরবর্তী উম্মত সহজেই পরিপূর্ণ দ্বীন ইসলাম পেয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা সম্পর্কে অনেকেই বেখবর। অনেকেই আবার উনাদের সমালোচনায় মুখর। নাঊযুবিল্লাহ! উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে, উনাদেরকে সত্যের মাপকাঠি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। নাঊযুবিল্লাহ! উপরন্তু উনাদেরকে নাক্বিছ ও অপূর্ণ বলে আত্মতৃপ্তি লাভ করতে চায় এরা সকলেই লা’নতগ্রস্ত বা মালউন। (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক) কারণ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি মুহব্বত রাখা, উনাদের প্রতি সুধারণা পোষণ করা হচ্ছে ঈমানের অঙ্গ। উনাদের ইত্তিবা বা অনুসরণ করা ফরয-ওয়াজিব। আর উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা, উনাদেরকে কষ্ট দেয়া, সমালোচনা করা, নাক্বিছ বা অপূর্ণ বলা কাট্টা কুফরী। এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা বা বিশ্বাস। এর বিপরীত আক্বীদা পোষণ করা কুফরী ।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “একমাত্র কাফিররাই উনাদের (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের) প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে।” (সূরা ফাতহ-২৯)

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, সে কাফির।’ (নাসীমুর রিয়াদ্ব)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হলেন- হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী। প্রতি মাসই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত বর্ণনা ও উনাদেরকে মুহব্বত করার মাস। তাই প্রত্যেকের দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে- প্রতি মাসে উনাদের বেশি বেশি ছানা-ছিফত করা ও মুহব্বত প্রকাশ করা।


তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment