by Admin
|
posted: Monday, June 21, 2021
|
আজকে যদি আমরা পেছন ফিরে তাকাই, চলে যাই মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ প্রকাশের পূর্বকালে, তাহলে আমাদের সামনে ভেসে উঠে সেই ঘোর অমানিশার তমসাবৃত চিত্র। যেটা অনেকটা যেন আইয়ামে জাহিলীয়াতেরই প্রতিচ্ছবি। যখন আলিম দাবিদারদের কোনো জবাবদিহিতা ছিল না, কোনো স্বচ্ছতা ছিল না, কোনো দায়িত্ববোধ ছিল না, ছিল স্বেচ্ছাচারিতা, মূর্খতা আর দায়িত্বহীনতা। ইসলামের নামধারী পত্রিকাগুলো যে যার ইচ্ছামত লিখতো, যা কিছু ইচ্ছা রায় দিতো। কিন্তু এ সম্পর্কে কোনো দলীল প্রমাণ বা জবাবদিহি করার প্রবৃত্তি তাদের মোটেই ছিল না।
প্রকাশিত লেখার প্রেক্ষিতে যে মানুষ দলীল চেয়ে পাবে ও পেতে পারে এ ধরনের কোনো জবাবদিহি বোধ তাদের মধ্যে ছিল না। তারা যা কিছু লিখতো তা কোথা থেকে লিখতো, কোনো কিতাব থেকে লিখতো তা উল্লেখ করার মতো কোনো স্বচ্ছতাও তাদের ছিল না। তদপুরি একটি ভুল মাসয়ালা লিখলে তার উপর আমল করলে সমূদয় গুনাহ যে তাদের উপর বর্তাবে সে ধরনের কোনো দায়িত্ববোধ তাদের ছিল না।
অর্থাৎ সয়লাব ছিল উলামায়ে ‘সূ’দের এক প্রবল অরাজকতায়। কিন্তু পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “মহান আল্লাহ পাক প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন করে মুজাদ্দিদ তথা হাদী পাঠাবেন।” (আবু দাউদ শরীফ)
ঠিক যথাযময়ে গর্জে উঠলেন, বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউসুল আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, আওলাদে রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমান যামানার তাজদীদী মুখপত্র- ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ।’
মাত্র ২৫৮ সংখ্যার মাধ্যমে আল বাইয়্যিনাত যেন গোটা পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছে, বাতিলের মুখোশ উম্মোচন করে দিয়েছে, ইসলামী জাগরণ তৈরি করেছে। আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার এই বেমেছাল ও বেপোরোয়া ভূমিকা রীতিমত গবেষণার বিষয়। সংক্ষিপ্ত পরিসরে যা উল্লেখ করা হলো মূলত, আল বাইয়্যিনাত শরীফ সম্পর্কে তা না বলারই নামান্তর। তবুও এ লিখা এ ধরনের একটি দুর্লভ প্রয়াস মাত্র।
আল বাইয়্যিনাত শরীফ মুফতী-মাওলানাদের জ্ঞানকে পূর্ণ ও সমৃদ্ধ করে দিচ্ছে:
যামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত কথিত মুফতী-মাওলানাদের জ্ঞানকেও একইভাবে পূর্ণ ও সমৃদ্ধ করছে। কারণ আল বাইয়্যিনত শরীফ-এ যে ব্যাপক দলীল দেয়া হয় তা সাধারণভাবে কোনো ব্যক্তি তো নয়ই, এমনকি কোনো মাদরাসা বা অপর কোনো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের জন্যও সংগ্রহ করা সত্যিই দুষ্কর। কারণ মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার এই দুর্লভ সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউসুল আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, আওলাদে রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল প্রজ্ঞা, প্রচেষ্টা তথা অব্যক্ত রূহানিয়তের সমৃদ্ধি বলে। যা আর কারো পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়।
আল বাইয়্যিনাত সাধারণ মানুষকে দলীল নামক শব্দের সাথে সম্পৃক্ত করেছে, তাদের দলীল চাওয়ার অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছে। এতদিন ছিল যখন দলীল চাওয়া-পাওয়া এবং বর্ণনা করা যেন কেবল কথিত আলিম উলামাদের ব্যাপার ছিল; কিন্তু মাসিক আল বাইয়্যিনাত সে কায়েমী ধারণার ভিত্তিমূলে আঘাত হেনেছে। আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার উসীলায় এখন তারা জেনেছে যে, মুসলমানগণের অবস্থা দুটি। এক যদি তারা না জানে তবে জিজ্ঞেস করা তাদের নায্য অধিকার। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমরা যারা জানো না, যারা জানেন তাদের কাছে জিজ্ঞস করে জেনে নাও।”
মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার সুওয়াল-জাওয়াব, ফতওয়া ইত্যাদি পড়ে সাধারণ মানুষ এখন ‘এত প্রশ্ন করতে হয় না, এত দলীল জিজ্ঞেস করতে হয় না।’ উলামায়ে ‘সূ’দের এ সমস্ত বক্তব্য যে অবান্তর ও মানুষকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত তা মুসলমানগণ বুঝতে পেরেছে। তাদের বিশ্বাস জন্মেছে যে, জানতে চাওয়া তাদের ঈমানের অধিকার, আর সে অধিকার বলে শুধু জিজ্ঞাসা করাই নয় বরং জিজ্ঞাসার প্রেক্ষিতে জবাবের দলীল জানতে চাওয়াও তাদের আরো নায্য অধিকার। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমরা যদি সত্যবাদী হয়ে থাক তবে দলীলসমূহ পেশ কর।”
প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য যে, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ পাঠ করে সাধারণ মানুষ এখন আর বিনা দলীলে পরিতৃপ্ত হয় না। তারা আজ পেতে অভ্যন্ত হয়েছে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার মাধ্যম ডজন ডজন তথা শত শত দলীল বা কিতাবের প্রমাণ।
তাই সাধারণ মানুষও আজ অবগত হয়েছে, হেদায়া, বেকায়া, নেহায়া, এনায়া, ফতহুল বারী, ফতহুল ক্বাদীর, দুররুল মুখতার, গায়াতুল আওতার, মারাকিউল ফালাহ, নূরুল ইজাহ, মালাবুদ্দা মিনহু, রদ্দুল মোহতার, শামী, তিবী, তালীকুছ হুবীহ, তাতারখানিয়া, ক্বাযীখান, খোলাছা, বাহরুর রায়িক ইত্যাদি ইথ্যাদি হাজার হাজার প্রামাণ্য কিতাব সম্পর্কে।
আল বাইয়্যিনাত শরীফ সাধারণ মানুষকে, উলামায়ে ‘সূ’দের চ্যালেঞ্জ করার হিম্মত যুগিয়েছে। উলামায়ে ‘সূ’দের দাবিয়ে রাখার হুমকীতেও আর তারা থেমে থাকছে না, তারা মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার তাছিরে আজ বুকটান করে উলামায়ে ‘সূ’দের হারাম আমলসমূহের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার এবং তদপ্রেক্ষিতে দলীল চাওয়ার হিম্মত পাচ্ছে। তাদের দেয়া মনগড়া, ভিত্তিহীন জবাবের পরিবর্তে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার উসীলায় উলামায়ে ‘সূ’দের কৃত ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, লংমার্চ, হরতাল, ব্লাসফেমী, মেয়েলোকের নেতৃত্ব গ্রহণ, ইসলামের নামে নির্বাচন, গণতন্ত্র ইত্যাদি হারাম হওয়ার দলীল জানছে এবং আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার দলীল হাতে নিয়ে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে উলামায়ে ‘সূ’দেরকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কুওওত পাচ্ছে।
আল বাইয়্যিনাত এমন এক নিয়ামত, যা ফিতনা তথা গৃহযুদ্ধ থেকে হিফাযতের কারণ:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমরা সকলে মহান আল্লাহ পাক উনার রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করো এবং তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়ো না। আর তোমরা সে নিয়ামতের কথা স্মরণ করো, যা মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের দিয়েছেন।”
বলাবাহুল্য, বর্তমান যামানায় দলীলবিহীন, মনগড়া ও ভ্রান্ত ফতওয়াজনিত কলহ-কোন্দলের প্রেক্ষিতে অকাট্য ও অখ-নীয় ব্যাপক দলীলভিত্তিক পত্রিকা “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” শরীফ মহান আল্লাহ পাক উনার সে নিয়ামত। যা গ্রহণে আমরা অবাঞ্ছিত সব কলহ, কোন্দল যার পরিণতি একটা সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধ, তা থেকে নাজাত লাভ করে মহান আল্লাহ পাক উনার রজ্জুকে শক্তভাবে ধরার একমাত্র উসীলারূপে পেয়েছি।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
by Admin
|
posted: Monday, March 14, 2016
|
পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে- হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার উদ্দেশ্যে পরস্পর পরস্পরকে মুহব্বত করে, একস্থানে বসে, দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং পরস্পরের মাঝে নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের জন্য আমার (মহান আল্লাহ পাক উনার) মুহব্বত অপরিহার্য। অন্য আরেক বর্ণনায় বর্ণিত আছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, তাদের জন্য জান্নাত উনার মধ্যে নূরের মিম্বরসমূহ স্থাপন করা হবে এবং উনাদেরকে দেখে সমস্ত নবী আলাইহিমুস সালামগণ উনারা এবং শহীদগণ উনারা খুশি হবেন এবং আকাঙ্খিত হবেন। সুবহানাল্লাহ!
এখন দেখুন, যদি একজন বান্দা বা উম্মতকে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার উদ্দেশ্যে মুহব্বত করলে বা উনাকে খুশি করলে এতো বিশেষ বা শ্রেষ্ঠতম নিয়ামত মুবারক লাভ করা সম্ভব হয়, তাহলে যিনি কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনাকে সৃষ্টি মুবারক না করা হলে কায়িনাত মাঝে কিছুই সৃষ্টি করা হতো না। উনারই সন্তুষ্টি মুবারক উনার উদ্দেশ্যে যদি উনার পবিত্রতম বিলাদত শরীফ ও পবিত্রতম বিছাল শরীফ উনাদের সম্মানিত দিন, তারিখ, মাস তথা পবিত্রতম সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা হয়, তাহলে কত শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠতম ও বিশেষ নিয়ামত মুবারক লাভ করা যাবে তা কল্পনার বাইরে। আর উনারই সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারলেই স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়া যাবে এবং উনার বন্ধু হওয়া যাবে। এখন আমরা যদি পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার উপলক্ষে মাল ও জান দিয়ে হাক্বীক্বীভাবে সর্বাধিক খিদমত করি। তাহলে সেটাই আমাদের জন্য সর্বোত্তম খুশি প্রকাশ করা হবে। তাই মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে হাক্বীক্বী খুশি প্রকাশ করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-আহমদ নুজহাত শেফা।© আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Saturday, February 13, 2016
|
যে ভ্যালেন্টাইনস ডে আজকে সারাবিশ্বেই ব্যাপকতা লাভ করেছে, সে ভ্যালেন্টাইনস ডে’র উদ্ভাবক তথা আয়োজক হলো কার্ড ব্যবসায়ী গোষ্ঠী। ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’-এরপর ‘ইস্টার সানডে’ পালনের মধ্যবর্তী সময়টা ছিলো তাদের ব্যবসার জন্য খুবই মন্দা। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িক স্বার্থ হাছিলের জন্যই তারা ‘ভ্যালেন্টাইন’ তত্ত্ব জাহির করে এবং প্রভূত অর্থও উপার্জন করে। গ্রীটিংস কার্ড অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, এদিনে কমপক্ষে একশ’ কোটি কার্ড বিনিময় হয়।
ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন সংস্থা সাচি অ্যান্ড সাচি, ভারতীয় বিজ্ঞাপনী সংস্থা এভারেস্ট, রিডিফিউশন, মার্কিন বিজ্ঞাপনী সংস্থা ঢেউ বেটস- এক এলাকার সংস্কৃতিকে অন্য ধরনের সংস্কৃতির লোকের কাছে বিজ্ঞাপনের পদ্ধতিতে বিপণন করায় সিদ্ধ হস্ত। কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত তাদের পদ্ধতিটা, মনোবৃত্তিটা, প্রক্রিয়াটা, আদৌ মালুম করতে পারেনি।
এমনকি যে ভ্যালেন্টাইস ডে নিয়ে এদেশে এখন বিস্তর মাতামাতি, এর পিছনে যে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির তল্পীবাহক লেফাফার শফিক রেহমানের একক কৃতিত্বের দাবিদার হওয়ার মনোবৃত্তি কাজ করেছে, তা সাধারণ মধ্যবিত্ত আজও উপলব্ধি করেনি। পাশাপাশি এর দ্বারা যে মুসলমান হারিয়েছে তার ঈমান, আমল, ঐতিহ্য, সুখশান্তি- তাও সাধারণ মধ্যবিত্ত মুসলমান আজও অনুভব করেনি।
১৯৯৩ সালে ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার সম্পাদক শফিক রেহমান ভ্যালেইন্টাইন ডে’র কথা বললো। এ সম্পর্কে পত্রিকাটির এক ভালোবাসা সংখ্যায় সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, “এটি নিয়ে বাংলাদেশ গর্বিত হতে পারে। বাংলাদেশে ১৯৯৩ এ যায়যায়দিন প্রথম ভালোবাসা দিন পালনের আহবান জানিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে।”
এদিকে শফিক রেহমানের কাঁধে খোদ ইবলিস সাওয়ার হয়ে তার দ্বারা যে কোটি কোটি মুসলমানের মাঝে বেপর্দা, বেহায়া, অশ্লীলতা ও ব্যভিচার মচ্ছবের প্রচলন ঘটিয়েছে; তা সে নিজেও উপলব্ধি করতে পারেনি।
তথাকথিত ভালোবাসা দিবস পালন মূলত অ-ভালোবাসা তথা নোংরামীর বিস্তার ঘটায়। পাশ্চাত্যে ভালোবাসা দিবস প্রচলনের পেছনে ছিলো ব্যবসায়ীদের স্বার্থ। পাশাপাশি এদেশে তা প্রবর্তনের পেছনে আছে পাশ্চাত্য গোলাম শফিক রেহমান ও ইহুদী খ্রিস্টানদের সুদূর প্রসারী ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র। মুসলমানের জন্য ভালোবাসা দিবস পালন করা সম্পূর্ণরূপে নাজায়িয ও হারাম। এটা এদেশে মুসলমানিত্ব নির্মূলের গভীর ষড়যন্ত্র।
উল্লেখ্য, তথাকথিত ভালোবাসা দিবসের প্রচারণা মূলত এটা প্রমাণ করে যে, আসলে ভালোবাসা দিবস পালনকারী স্বামী-স্ত্রীরা ভালোবাসার অভাবে ভুগছে। ভালোবাসার বন্ধনহীনতায় ভুগছে। অশান্তিতে ভুগছে। যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছে। তার থেকে উত্তরণ লাভের জন্য তারা তথাকথিত ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার চেতনায় উজ্জীবিত হবে।
মুসলমান স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শের কারণে যে অগাধ মুহব্বত থাকে তা ইহুদী-নাছারা তথা বিধর্মী অর্থাৎ পশ্চিমা বিশ্ব ও এদেশীয় পশ্চিমা এজেন্টরা কল্পনাই করতে পারে না ও পারবে না। বরং তারা তার বিপরীত আযাব-গযব তথা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া-ফাসাদ ও ভালোবাসাহীনতাই ভুগে। তাদের সে ভালোবাসাহীন যন্ত্রণাকাতর দগ্ধ জীবনে একটু ভালোবাসার চেতনার জন্য তাদের কাছে ভালোবাসা দিবসের প্রয়োজনীয়তা গ্রহণযোগ্য ও আদরণীয় হয়েছে।
ইদানীংকালে এদেশেও পশ্চিমা সংস্কৃতি ব্যাপকভাবে বিস্তারের কারণে পশ্চিমা সামাজিক সাংস্কৃতিক সমস্যা ও সঙ্কটও এদেশে ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে এবং সে সমস্যা সমাধানে পশ্চিমা ধাঁচের অনুকরণেই প্রয়াস চলছে। এতদ্বপ্রেক্ষিতে এদেশে ভালোবাসা দিবসের প্রচারণার বিস্তার ঘটছে।
আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এই তথাকথিত ভালোবাসা দিবস কখনোই এদেশীয় অর্থাৎ বাঙালি সংস্কৃতির অংশ ছিল না। আর মুসলমানদের সংস্কৃতিতো নয়ই।
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ভিড় বেড়েছে নগরীর বিভিন্ন বিপণী বিতান ও গিফট শপগুলোতে। হচ্ছে ফুলব্যবসা। ভালোবাসার এ নিদর্শনের পার্সেল অর্ডার নিচ্ছে পুষ্প বিতানগুলো, নির্ধারিত ঠিকানায় প্রাপককে ভালোবাসার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেয়ার আয়োজন করছে। ব্র্যান্ড ও জাদু শিল্পীদেরও অনুষ্ঠানের কমতি নেই। তারাও ব্যস্ত স্টেজ শো করতে। তারকা হোটেলসহ সর্বত্র আয়োজন। সোনারগাঁও, শেরাটন, র্যাডিসন হোটেলও কথিত ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর বিশেষ পার্টির আয়োজন করে। গভীর রাত পর্যন্ত এসব অনুষ্ঠানে চলে নাচ-গান, র্যাফেল ড্র এবং বেস্ট কাপল অ্যাওয়ার্ড।
তথাকথিত ভালোবাসা দিবসের নামে মূলত চলে বেপর্দা-বেহায়াপনার নির্লজ্জ উৎসব। যাতে ইবলিস শয়তানের ওয়াস্ওয়াসা থাকে এবং নফস বা প্রবৃত্তির উদ্দামতা যুক্ত হয়। যা পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের মুবারক নির্দেশ মুতাবিক শক্ত কবীরা গুনাহ এবং পরকালে এসব কাজের জন্য কঠিন শাস্তি পেতে হবে তথা জাহান্নামে যেতে হবে। কারণ এ দিবসের প্রবর্তন হয়েছে বিধর্মীদের থেকে এবং তা পালিত হয় বেশরীয়তী পন্থায়।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক-উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।”
অতএব, মুসলমানদের জন্য বিধর্মীদের অনুসরণ করে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ পালন কুফরী ও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। এর থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্য ফরয।
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।© আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Saturday, February 13, 2016
|
কিছু ইতিহাস জ্ঞানশূন্য ও গ-মূর্খরা কথিত বাংলা সনের ফাল্গুন মাসের প্রথম দিনকে ‘পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব’ হিসেবে পালন করে। এটাকে বাঙালি জাতির উৎসব বলে অপপ্রচারণাও চালায়। ভারত নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলো অতি রঞ্জিত করে এসব প্রচার-প্রসার করে। কিন্তু আসলে বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির সাথে এর আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রকৃতপক্ষে, বাংলা সন হিসেবে আমরা যে সালটি গণনা করি সেটি কোনো বাঙালি শুরু করেনি, করেছিলো মোঘল সম্রাট আকবর। যে জাতি হিসেবে ছিলো মঙ্গলীয় এবং তার ভাষা ছিলো ফার্সী। ১৫৯৩ ঈসায়ী (৯৯৩ হিজরী) সালে এ সন চালু করে বাদশাহ আকবর। কিন্তু জারি করার বৎসর হিসাবে দেখানো হয় ১৫৬৩ ঈসায়ী মুতাবিক ৯৬৩ হিজরী সালকে। শুরুতেই কথিত এ বাংলা সনের নামও ‘বাংলা’ সন ছিলো না, এর নাম ছিলো ‘তারিখ-ই-ইলাহি’। যেহেতু সম্রাট আকবর সে মুশরিকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মকে গুলিয়ে ‘দ্বীন-ই-ইলাহি’ নামক একটি নতুন ভ্রান্ত ধর্ম চালু করেছিলো, সেই দ্বীন-ই-ইলাহির নাম অনুসারে এর নামকরণ হয়।
উল্লেখ্য, নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেছিলো বিভ্রান্ত আকবর। এর মধ্যে একটি ছিলো বসন্ত উৎসব, অবশ্য তখন ঋতুর নাম ভিন্ন ছিলো। (তথ্য সূত্র: যুগান্তর, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ঈসায়ী)
প্রচলিত বসন্তোৎসবের আরেকটি শিকড় আছে। সেটা হচ্ছে হিন্দুদের দোলযাত্রা। এ দোলযাত্রাকেও বসন্তোৎসব নামে ডাকা হয়, যদিও ফাল্গুন মাসের জ্যোৎস্নার তিথিতে এটি অনুষ্ঠিত হয়। ঐদিন উপজাতিরা ‘ফাগুয়ার হোলি খেলা’ নামক একটি উৎসব করে, সেটাকেও তারা বসন্ত উৎসব নামে ডাকে। সাম্প্রতিককালে কথিত এ বসন্ত উৎসব চালু হয় ১৪০১ ফসলী সনে। এর আয়োজনে ছিলো ঢাবি’র চারুকলা ইন্সটিটিউট।
মূলকথা হচ্ছে, বসন্ত উৎসব বা পহেলা ফাল্গুন নামে যা পালন হচ্ছে, তার সাথে না আছে বাঙালিত্বের কোনো ইতিহাস, না আছে দ্বীন ইসলামের কোনো সম্পৃক্ততা। মূলত, বাংলাদেশের মুসলমানদের ঈমানী শক্তিকে নষ্ট করে দিতে, তাঁদেরকে জাহান্নামী ও মুশরিকদের মতো মালউন (অভিশপ্ত)দের অন্তর্ভুক্ত করে দিতে এটা একটা চক্রান্ত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, “যে যার সাথে মিল রাখে তার হাশর-নশর তার সাথে হবে।” (পবিত্র হাদীছ শরীফ)
সুতরাং মালউন হিন্দুদের সাথে মিল রাখার জন্য, তাদের পথকে অনুসরণ করার জন্য মুসলমানও ঈমান হারিয়ে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
তাই এ সকল হারাম ও কুফরী অপসংস্কৃতি বন্ধ করা মুসলমান হিসেবে আমাদের একান্ত দায়িত্ব। আর এসব বন্ধ করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে, নিজে এসবের মধ্যে না যাওয়া এবং পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবাইকে বুঝিয়ে এসবের মধ্যে যেতে নিষেধ করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে হিফাযত করুন। আমীন!
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-সালেহ মুহম্মদ মুন্সি।© আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Sunday, December 27, 2015
|
একজন বয়োঃপ্রাপ্ত ও সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মুসলমান পুরুষ-মহিলার জন্য দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামায আদায় করতে হয়। এ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের নামকরণ পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারাই হয়েছে। যেমন ফজর, যুহর, আছর, মাগরিব ও ‘ইশা।
আজ পর্যন্ত কোন মুসলমান এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযকে ওয়াক্তের ভিত্তিতে যথাক্রমে ভোরের নামায, দুপুরের নামায, বিকালের নামায, সন্ধ্যার নামায ও রাতের নামায বলে অভিহিত করে না। এমনকি ইংরেজীতেও লেখার সময় লেখা হয়- Fajar prayer, Zuhor prayer, Asar prayer, Magrib prayer, Isha prayer|আবার পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সপ্তাহের বারসমূহ- সাবত (يوم السبت), আহাদ (يوم الأحد), ইছনাইন (يوم الأثنين), ছুলাছা (يوم الثلاثاء), আরবিয়া (يوم الأربعاء), খ¦মীস (يوم الخميس), জুমু‘আ (يوم الجمعة) হিসেবে অভিহিত। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت ابي هريرة رضي الله تعالى عنه قال أخذ رسول الله صلى الله عليه وسلم بيدي فقال خلق الله التربة يوم السبت، وخلق فيها الـجبال يوم الأحد، وخلق الشجر يوم الأثنين وخلق الـمكروه يوم الثلاثاء، وخلق النور يوم الأربعاء، وبث فيها الدواب يوم الخميس، وخلق آدم عليه وسلم بعد العصر من يوم الجمعة في آخر الـخلق في آخر ساعة من النهار فيما بين العصر إلى الليل.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার হাত ধরে বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইয়াওমুস সাবত পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল আহাদ পর্বত সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল ইছনাইন গাছ সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ বিষয়গুলো সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল আরবিয়া আলো সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল খ¦মীস সব ধরনের প্রাণী সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল জুমু‘আ আছরের পর হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সর্বশেষ সৃষ্টি হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।” (মুসলিম শরীফ)
অন্যদিকে বাংলায় সপ্তাহের বারসমূহ হিন্দু-মুশরিকদের বিভিন্ন দেব-দেবীর বা গ্রহ-নক্ষত্রের নামানুসারে (গ্রহ-নক্ষত্রগুলোকে হিন্দু-মুশরিকরা দেব-দেবী হিসেবেই গ্রহণ করেছে) ও ইংরেজীতে বিভিন্ন রোমান দেব-দেবীর নামানুসারে এসেছে। যেমন-
Saturday Saturn বা শনি গ্রহের সম্মানে শনিবার শনি দেবতার নাম অনুসারে
Sunday Day of God (বিধাতার দিন) রবিবার রবি বা সূর্য দেবতার নাম অনুসারে
Monday MoonÕs day (চাঁদের দেবীর সাথে মিলিয়ে) সোমবার সোম বা শিব দেবতার নাম অনুসারে
Tuesday দেবতা Tyr-এর নাম থেকে মঙ্গলবার ধূপ বা দ্বীপের নাম অনুসারে
Wednesday Mercury দেবতার নাম থেকে বুধবার গ্রহের নাম অনুসারে
Thursday Thor দেবতার নাম থেকে বৃহস্পতিবার গ্রহের নাম অনুসারে
Friday দেবী Frigg -এর নাম থেকে শুক্রবার গ্রহের নাম অনুসারে
তাহলে মুসলমানরা কি করে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত নামকরণ বাদ দিয়ে সপ্তাহের বারের নাম উচ্চারণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেব-দেবীর নাম উচ্চারণ করে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি মুসলমানদের মুহব্বত কি কমে গিয়ে বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতি বেশি হয়ে গিয়েছে? নাঊযুবিল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি মুসলমানদের মুহব্বত যদি সত্যিই বেশি হয়ে থাকে তাহলে পৃথিবীর সকল মুসলমানের উচিত সপ্তাহের নামকরণের ক্ষেত্রে সকল দেব-দেবীর নাম উচ্চারণ/লেখা পরিহার করে জীবনের সর্বক্ষেত্রে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত নাম অনুযায়ী সপ্তাহের নাম উচ্চারণ করা বা লেখা।
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক ও পবিত্র বিছালী শান মুবারকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শান মুবারক ইছনাইন বারে প্রকাশ করেছেন। তাই ইছনাইন বারকে আলাদাভাবে সম্মানার্থে “ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম” হিসেবে সম্বোধন করতে হবে।
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-মুহম্মদ জুলহাজুদ্দীন।© আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Sunday, December 27, 2015
|
ইমামুল মুহাদ্দিসীন হযরত মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি সমগ্র বিশ্বে সকলের কাছে এক নামে স্বীকৃত একজন মুহাদ্দিস। এখন থেকে প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে উনার বিলাদত শরীফ। তিনি পবিত্র ইলমে হাদীছ শরীফ উনার জ্ঞান অর্জন করতে পবিত্র মক্কা শরীফ শরীফ, পবিত্র মদীনা শরীফ সব স্থানে ছফর করেন। সকল মাদরাসায় পঠিত এবং সকল উছুলে হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে উনার নাম স্বমহিমায় উজ্জ্বল দীপ্তি ছড়াচ্ছে। উনার রচিত ‘মিশকাত শরীফ’-এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘মিরক্বাত শরীফ’ সারা পৃথিবীতে একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী কিতাব। তিনি সারাটা জীবন অসংখ্য কিতাব রচনা করে মুসলিম জাহানের জন্য এক বিশাল নিয়ামত রেখে গিয়েছেন।
উনার অসংখ্য কিতাবের মধ্যে একটা খুবই গুরুত্ব¡পূর্ণ এবং ঐতিহাসিক গ্রন্থের নাম হচ্ছে ‘আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবী’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ কিতাবে তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ সম্পর্কে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ থেকে দলীল পেশ করেছেন। এবং সেই সাথে একটা বিষয় উল্লেখ করেছেন সেটা হচ্ছে, “সারা পৃথিবীর সকল দেশে যে জাঁকজমকের সাথে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পালন হতো তার ঐতিহাসিক প্রমাণ উল্লেখ করেছেন।” আমরা উক্ত কিতাব থেকে সে ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলো উল্লেখ করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ!
(১) পবিত্র মক্কা শরীফ উনার অধিবাসীদের পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন:
“আমাদের মাশায়েখ উনাদের ইমাম, হযরত ইমাম শায়েখ শামসুদ্দিন মুহম্মদ সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পবিত্র মক্কা শরীফে মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠানে যারা কয়েক বছর উপস্থিত ছিলেন, আমি তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। আমরা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ অনুষ্ঠান উনার বরকত অনুভব করছিলাম যা নির্দিষ্ট কয়েক ব্যক্তির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়। এ অনুষ্ঠানের মধ্যেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক যিয়ারত আমার কয়েকবার হয়েছে।
আল্লামা হযরত সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন, পবিত্র মক্কাবাসীগণ বরকত ও কল্যাণের খনি। উনারা সেই প্রসিদ্ধ পবিত্র স্থান উনার প্রতি বিশেষ মনোনিবেশ করেন, যেটা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার স্থান। এটা সাউকুল লাইলে অবস্থিত। যাতে সুমহান বরকতে প্রত্যেকের সকল উদ্দেশ্য সাধিত হয়। এসকল সম্মানিত মানুষেরা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার দিন আরো অনেক কিছুর আয়োজন করে থাকেন। এ আয়োজনে আবেদ, নেককার, পরহিজগার, দানবীর কেউই বাদ যায় না। বিশেষ করে হেজাজের আমীর বিনা সংকোচে সানন্দে অংশগ্রহণ করেন এবং উনার আগমন উপলক্ষে ঐ জায়গায় এক বিশেষ নিশান তৈরি করা হতো। পরবর্তীতে এটা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার বিচারক ও বিশিষ্ট আলিম আল-বুরহানিশ শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে আগত যিয়ারতকারী খাদিম ও সমবেত লোকদের খানা ও মিষ্টি খাওয়ানো পছন্দনীয় কাজ বলে রায় দিয়েছেন।”
(২) পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসীদের পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল:
“পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসিগণও পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার আয়োজন করতেন এবং অনুরূপ অনুষ্ঠানাদি পালন করতেন। বাদশাহ হযরত মোজাফফর শাহ আরিফ অধিক আগ্রহী এবং সীমাহীন আয়োজনকারী ছিলেন। হযরত ইমাম আবু শামা রহমতুল্লাহি আলাইহি, যিনি ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্যতম শায়েখ এবং বিশিষ্ট বুযুর্গ ছিলেন, তিনি স্বীয় কিতাব “আল বায়াছ আলাল কদয়ে ওয়াল হাওয়াদিছে” বাদশাহের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন- এরকম ভালো কাজসমূহ উনার খুবই পছন্দ এবং তিনি এধরনের অনুষ্ঠান পালনকারীদের উৎসাহ প্রদান ও প্রশংসা করতেন। ইমাম হযরত জাজরী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো সংযোজন করে বলেন, এসব অনুষ্ঠানাদি পালন করার দ্বারা শয়তানকে নাজেহাল এবং ঈমানদারদের উৎসাহ উদ্দীপনা দানই উদ্দেশ্যে হওয়া চাই।”
(৩) মিশর ও সিরিয়াবাসীগণ উনাদের পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন:
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিলে সবচাইতে অগ্রগামী ছিলেন মিশর ও সিরিয়াবাসী। মিশর সুলতান প্রতি বছর পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান রাত্রে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার আয়োজনে অগ্রণী ভূমিকা রাখতেন। ইমাম হযরত সামছুদ্দীন সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ননা করেন আমি ৭৮৫ হিজরী সনে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সুমহান রাতে সুলতান বরকুকের উদ্যোগে আল জবলুল আলীয়া নামক কেল্লায় আয়োজিত মীলাদ শরীফ মাহফিলে হাজির হয়েছিলাম। ওখানে আমি যা কিছু দেখেছিলাম, তা আমাকে অবাক করেছে অসীম তৃপ্তি দান করেছে। কোনোকিছুই আমার কাছে অসস্থিকর লাগেনি। সেই মহান পবিত্র রাতে বাদশাহর ভাষণ, উপস্থিত বক্তাগণের বক্তব্য, ক্বারীগণের তিলাওয়াতে কুরআন শরীফ, এবং না’ত শরীফ পাঠকারীগণের না’ত শরীফ আমি সাথে সাথে লিপিবদ্ধ করে নিয়েছি।”
(৪) স্পেন ও পাশ্চাত্য দেশে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন:
স্পেন ও পাশ্চাত্য শহরগুলোতে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার রাতে রাজা-বাদশাহগণ বিশাল লোকবহর নিয়ে শহরের রাস্তা প্রদক্ষিণ করতেন। সেই লোকবহরে বড় বড় ইমাম ও ওলামায়ে কিরামগণ অংশগ্রহণ করতেন। মাঝ পথে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক এসে উনাদের সাথে যোগ দিতেন এবং কাফিরদের সামনে সত্য বাণী তুলে ধরতেন। আমি যতটুকু জানি, রোমবাসীগনও কোন অংশে পিছিয়ে ছিলো না। তারাও অন্যান্য বাদশাহগণের মতো পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার আয়োজন করতেন।”
(৫) অনারব দেশে তথা ভারতবর্ষে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন:
“আরব ছাড়াও অনারবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার প্রচলন ছিলো মহাসমারোহে। যেমন- পবিত্র রবীউল আউওয়াল মাসে এবং মহিমান্বিত দিনে এসব এলাকার অধিবাসীদের পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিলে জাঁকজমকপূর্ণ মজলিসের আয়োজন হতো, গরিব মিসকিনদের মধ্যকার বিশেষ ও সাধারণ সকলের জন্য বহু ধরনের খাবারের ব্যবস্থা করা হতো। তাতে ধারাবাহিক তিলাওয়াত, বহু প্রকার খতম এবং উচ্চাঙ্গ ভাষায় প্রশংসা সম্বলিত ক্বাছীদা শরীফ পাঠ করা হতো। বহু বরকতময় ও কল্যাণময় আমলের সমাহার ঘটতো, বৈধ পন্থায় আনন্দ প্রকাশ করা হতো, বহু বিখ্যাত আলিমগণও তাতে অংশগ্রহণ করতেন। মুঘল বাদশাহ হুমায়ুনও বিশাল জাঁকজমকের সাথে প্রতিবছর পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার আয়োজন করতেন।” (দলীল- আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবিইয়ি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। লেখক- ইমামুল মুহাদ্দিসীন হযরত মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। বিছাল শরীফ: ১০১৪ হিজরী।)
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! দেখুন, সারা দুনিয়াতে আজ থেকে ৫০০/৬০০ বছর আগেও সমগ্র দেশব্যাপী দেশের বাদশাহ এবং জনগণ সবাই মিলে ব্যাপকভাবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতেন। এবং সেসব মাহফিলে উপস্থিত থাকেন তখনকার যুগশ্রেষ্ঠ আলিম এবং ইমামগণ। তখন পৃথিবীর যমীনে কোনো মানুষই এর বিরোধিতা করে নাই। কোনো আপত্তি করে নাই।
তবে আজ ২০/২৫ বছর ধরে কোন্ নব্য দল উদয় হলো যে, এরা যুগযুগ ধরে চলে আসা এই বরকতময় আমল উনার বিরোধিতা করে? পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন হারাম-নাজায়িয বলে কোন্ সাহসে? এই নব্য উদিত ফিতনা ওহাবী, সালাফী, জামাতী, দেওবন্দী, খারিজীদের কে অধিকার দিয়েছে মনগড়া ফতওয়া দেয়ার?
শুধু তাই নয়, বিষয়টি বিখ্যাত হাদীছ শরীফ বিশারদ, লক্ষাধিক হাদীছ শরীফ উনার হাফিয, বিখ্যাত মুহাদ্দিস, বুখারী শরীফ উনার ব্যাখ্যাকারক, হাফিযে হাদীছ, আল্লামা ইমাম কুস্তালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার কিতাবে বর্ননা করেন,
ﻭﻻﺯﺍﻝ ﺍﻫﻞ ﺍﻻﺳﻼﻡ ﻳﺤﺘﻔﻠﻮﻥ ﻳﺸﻬﺮ ﻣﻮﺍﻟﺪﻩ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﻳﻌﻤﻠﻮﻥ ﻟﻮﻻﺀﻡ ﻭ ﻳﺘﺼﺪ ﻗﻮﻥ ﻓﻲ ﻟﻴﺎﻟﻴﻪ ﺑﺎﻧﻮﺍﻉ ﺍﻟﺼﺪﻗﺎﺕ ﻭﻳﻈﻬﺮﻭﻥ ﺍﻟﺴﺮﻭﺭﻳﺮﻳﺪﻭﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺒﺮﺍﺕ ﻭ ﻳﻌﺘﻨﻮﻥ ﺑﻘﺮﺍﺓ ﻣﻮﻟﺪ ﺍﻟﻜﺮﻳﻢ ﻭﻳﻈﻬﺮ ﻋﻠﻬﻢ ﻣﻦ ﺑﺮﻛﺎﺗﻪ ﻛﻞ ﻓﻀﻞ ﻋﻤﻴﻢ ﻭ ﻣﻤﺎ ﺟﺮﺏ ﻣﻦ ﺧﻮﺍﺻﻪ ﺍﻧﻪ ﺍﻣﺎﻥ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﻌﺎﻡ ﻭﺑﺸﺮﻱ ﻋﺎﺟﻠﺔ ﺑﻨﻴﻞ ﺍﻟﺒﻐﻴﺔ ﻭ ﺍﻟﻤﺮ ﺍﻡ ﻓﺮﺣﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻣﺮﺀ ﺍﺗﺨﺬ ﻟﻴﺎﻟﻲ ﺷﻬﺮ ﻣﻮﻟﺪﻩ ﺍﻟﻤﺒﺎﺭﻙ ﺍﻋﻴﺎﺩ ﺍﻟﻴﻜﻮﻥ ﺍﺷﺪ ﻋﻠﺔ ﻋﻠﻲ ﻣﻦ ﻓﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﻣﺮﺽ ﻭ ﻋﺘﺎﺩ ﻭﻟﻘﺪ ﺍﻃﻨﺐ
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার মাসে মুসলিম মিল্লাত সর্বদা মাহফিল অনুষ্ঠিত করে আসছেন, আনন্দের সাথে খাওয়া-দাওয়া তৈরি করছেন এবং খাওয়ার দাওয়াত করে আসছেন। এই মহান রাতে উনারা বিভিন্ন রকমের দান-খয়রাত এবং আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন এবং ভালো কাজ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধিই করে আসছেন। উনার বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়ে আসছেন। যার বরকতে উনাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ বরাবরই হচ্ছে। এর বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে এটা পরিলক্ষিত যে, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার কারণে ঐ বছর নিরাপত্তা কায়িম থাকে এবং সমস্ত নেক উদ্দেশ্য পূরণে তড়িৎ সুসংবাদ প্রবাহিত হয়। অতএব, মহান অল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তির উপর অসংখ্য রহমত বর্ষণ করেন। যিনি পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাসে প্রতিটি রাতকে ঈদ বানিয়ে নিয়েছেন। আর পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার এই ঈদ তাদের অন্তরে কঠিন মুছিবত হয়ে যায় যাদের অন্তরে ব্যাধি ও শত্রুতা আছে।” (দলীল- আল মাওয়াহেবুল লাদুনীয়া ১ম খ- ২৭ পৃষ্ঠা, মিসর থেকে প্রকাশিত।)
আসুন এবার আমরা দেখি, হাফিযে হাদীছ আল্লামা হযরত কুস্তালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপরোক্ত বক্তব্য মুবারক থেকে কীসব বিষয় প্রমাণিত হচ্ছে,
১) পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাসে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিল অনুষ্ঠান করা মুসলিম মিল্লাতের ঐতিহ্যবাহী তরীক্বা।
২) মুসলিম জাহান এই মহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার রাতে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে এবং দান-সদকা করে আসছে!
৩) মহান রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসে ঈদ পালন করা মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী আমল।
৪) পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার রাতে অধিক থেকে অধিক হারে নেক কাজ করা মুসলমান উনাদের একটি প্রিয় তরীক্বা হিসাবে গণ্য হয়ে আসছে।
৫) মহান রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনাতে পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়া এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়ার বৈশিষ্ট্যম-িত বিশেষ আয়োজন করা মুসলমান উনাদের একটি অত্যন্ত প্রিয় আমল হিসাবে বিবেচিত।
৬) পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মহান বরকতে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠকারী দের উপর আল্লাহ তায়ালা উনার ব্যাপক অনুগ্রহ সর্বদা বর্ষিত হয়ে আসছে।
৭) পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার বৈশিষ্ট্যসমূহ হতে একটি অতীব সত্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যে বছর এই সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, ঐ গোটা বছরই পরম নিরাপদে অতীত হয়। সুবহানাল্লাহ!
৮) পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার অনুষ্ঠান নেক উদ্দেশ্য পূরণে খোশ সংবাদ প্রদানকারী।
৯) পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ উনার রাত্রিতে আনন্দ উদযাপনকারী মুসলমানগণ উনারা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার রহমত উনার ভাগীদার হন।
১০) পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার আয়োজন করা এবং পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাসে প্রত্যকটি রাতেই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ কারার আনন্দ উদযাপন করা ঐ জাতীয় লোকদের জন্য কঠিন মুছিবত, যাদের অন্তরে নাপাকী আছে এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে দুশমনী আছে। নাউযুবিল্লাহ!
সুতরাং প্রমাণিত হলো- পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ নতুন কোনো আমল নয়, বরং সমগ্র পৃথীবির সব প্রান্তেই পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা হয়ে আসছে। আর ইবলিস শ্রেণীর মানুষ যাদের অন্তরে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিদ্বেষ আছে তারাই একমাত্র পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে বিদয়াত বলে। নাউযুবিল্লাহ!
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-আল্লামা মুহম্মদ নূর উদ্দীন পলাশ। © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
by Admin
|
posted: Sunday, December 27, 2015
|
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি (মহান আল্লাহ পাক) আপনার আলোচনা ও মর্যাদা-মর্তবা মুবারক সমুন্নত ও বুলন্দ করেছি।” (পবিত্র সূরা ইনশিরাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
স্বয়ং খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার আলোচনা, মর্যাদা মুবারক সমুন্নত ও বুলন্দ করেছেন উনার আলোচনা, মর্যাদা, মুহব্বত উম্মতদেরকে কতটুকু ধারণ করতে হবে? বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান উনাদের অন্তরে এই বরকতময়, ফযীলতপূর্ণ আলোচনা বুলন্দ করতে হলে বা জারি করতে হলে পাঠ্যপুস্তকে খুব সুচারুরূপে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার আলোচনা, ফাযায়েল-ফযীলত ফুটিয়ে তুলার বিকল্প নেই। এর মধ্যেই রয়ে গেছে মুসলমানদের দুনিয়া ও পরকালের সফলতা।
সুতরাং ৯৮ ভাগ মুসলমানের পাঠ্যপুস্তক থেকে নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুয়ানীয় বিষয়সমূহ সম্পূর্ণরূপে উঠিয়ে দিয়ে এর পরিবর্তে মুসলমানদের জন্য অবশ্য পালনীয় ও অত্যাধিক ফযীলতপূর্ণ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কিত আলোচনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌
-মুহম্মদ ইবরাহীম সোহেল।© আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net
Recent Comments