আজ ঐতিহাসিক ও বরকতপূর্ণ পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম।




মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘সাবধান! নিশ্চয় যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী, উনাদের কোনো ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।’
আজ ঐতিহাসিক ও বরকতপূর্ণ পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম। মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিছাল শরীফ-এর দিবস।
তাই প্রত্যেক মুসলমান এবং বাংলাদেশ সরকারসহ পৃথিবীর সকল দেশের সরকারের উচিত-
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে অর্থাৎ মীলাদ শরীফ, ক্বিয়াম শরীফ ও দোয়া মুনাজাত-এর মাহফিলের মাধ্যমে এ দিনটি পালন করা এবং এ দিনের সম্মানার্থে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।


যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, রবীউছ ছানী মাস অত্যন্ত বরকত ও ফযীলতপূর্ণ মাস। এই মাসেরই ১১ শরীফ অর্থাৎ আজ বড়পীর সাহেব মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন। বড়পীর সাহেব গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিলাদত শরীফ থেকে বিছাল শরীফ পর্যন্ত আমরা যে ওয়াকিয়া বা ইতিহাস দেখতে পাই; তার মধ্যে হাজারো নছীহত বা ইবরত রয়ে গেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “সাবধান! নিশ্চয় যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের কোনো ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।”
পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম-এর গুরুত্ব তাৎপর্য এবং এতে মুসলমানের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা কালে তিনি এসব কথা বলেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, গাউছুল আ’যম, বড়পীর ছাহেব হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে পূর্ববর্তী আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনারা ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। আওলাদে রসূল এবং আহলে বাইত উনাদের অন্তর্ভুক্ত হযরত ইমাম জাফর সাদিক আলাইহিস সালাম (যিনি হযরত ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পীর ছাহেব বা শায়েখ বা মুর্শিদ ছিলেন) উনি উনার ‘কাশফূল গুয়ুব’ নামক কিতাবে লিপিবদ্ধ করেন যে, এক বিশেষ রূহানী মজলিসে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আগমনের সংবাদ দান করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন যে, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের শাহাদাতের পর আমি আমার উম্মতের কথা ভেবে চিন্তিত হলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার দুই মাহবুব বান্দা দ্বারা আমাকে সুসংবাদ দান করেন। সেই দুই মাহবুব বান্দার অন্যতম একজন মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, “প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে মহান আল্লাহ পাক তিনি এই উম্মতের ইছলাহর জন্য এমন লোক প্রেরণ করবেন, যিনি দ্বীনের সংস্কার করবেন।” অর্থাৎ বিদয়াত, বেশরা এবং শরীয়ত বিগর্হিত কাজগুলোর সংশোধন করবেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সেই রকম একজন খাছ ও বিশিষ্ট ওলীআল্লাহ হলেন- গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ৪৭১ হিজরীতে পহেলা রমাদ্বান শরীফ, সোমবার শরীফ-এ পবিত্র জিলান নগরে বিলাদত শরীফ লাভ করেন। জিলান নগরীটি তৎকালে ইরানে অবস্থিত ছিলো।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পিতার দিক থেকে হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং মাতার দিক থেকে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের বংশধর অর্থাৎ আওলাদে রসূল। গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতার নাম মুবারক হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গী দোসত রহমতুল্লাহি আলাইহি। যেহেতু তিনি যুদ্ধ প্রিয় ছিলেন সেহেতু উনাকে জঙ্গী দোসত বলা হয়। আর উনার মাতার নাম মুবারক হযরত উম্মুল খায়ের আমাতুল জাব্বার ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘বাহজাতুল আসরার’ নামক কিতাবে হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ৫৬১ হিজরীর রবীউল আউয়াল শরীফ মাস হতে অসুস্থ হয়ে পড়লেন।

‘তাওয়ারিখে আউলিয়া’ নামক কিতাবে হযরত শায়েখ আব্দুল ফতেহ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, রোববার দিবাগত রাত্রে অর্থাৎ সোমবার রাত্রে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গোসল করেন। গোসলান্তে ইশার নামায আদায় করে তিনি উম্মতে হাবীবীগণের গুনাহখাতা মাফের জন্য ও তাদের উপর খাছ রহমতের জন্য দোয়া করলেন। এরপর গায়েব হতে আওয়াজ আসলো, “হে প্রশান্ত নফস, আপনি সন্তুষ্টচিত্তে, সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত হয়ে নিজ প্রতিপালক উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করুন। আপনি আমার নেককার বান্দার মধ্যে শামিল হয়ে যান এবং বেহেশতে প্রবেশ করুন।” এরপর তিনি কালিমা শরীফ পাঠ করে তাআজ্জাজা (অর্থ বিজয়ী হওয়া) উচ্চারণ করতে লাগলেন এবং তিনি আল্লাহ, আল্লাহ, আল্লাহ বললেন। এরপর জিহ্বা মুবারক তালু মুবারক-এর সাথে লেগে গেলো। এভাবে ৫৬১ হিজরীর ১১ই রবীউছ ছানী মাসের সোমবার শরীফ-এ গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহান দরবার শরীফ-এ প্রত্যাবর্তন করলেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আর এ দিনটিই সারাবিশ্বে ‘পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম’ নামে মশহুর। আজ সেই পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তাই প্রত্যেকের উচিত এই ঐতিহাসিক ও বরকতপূর্ণ দিবসটি অত্যন্ত জওক-শওক্ব ও মুহব্বতের সাথে মীলাদ শরীফ, ক্বিয়াম শরীফ ও দোয়া মুনাজাতের মাহফিল-এর মাধ্যমে উনার বরকতময় সাওয়াহে উমরী বা জীবনী মুবারক আলোচনা করে অতিবাহিত করা। আর সরকারের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে- এ দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ এদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা। পাশাপাশি মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে উনার জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করা।
-০-



তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment