মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনো এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান


মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনো এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনো ও উনার খিদমত করো, তা’যীম তাকরীম করো এবং উনার ছানা-ছিফত বা প্রশংসা করো সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে সদা-সর্বদা।’
সকল বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যথাযথ খিদমত করা অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খিদমতের আঞ্জাম দেয়া, তা’যীম-তাকরীম ও ছানা-ছিফত করা;
যা অশেষ ফযীলত ও পরকালে নাজাত লাভ করার অন্যতম উসীলাও বটে।
তাই কুল-কায়িনাতের জন্য ফরয ওয়াজিব হচ্ছে- সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম, রবীউল আউয়াল শরীফ মাস তো অবশ্যই বরং অনন্তকাল খিদমতের আঞ্জাম দেয়া, তা’যীম-তাকরীম ও ছানা-ছিফত করা।


যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও ভয়প্রদর্শনকারীরূপে। তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনো এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনো ও উনার খিদমত করো, তা’যীম তাকরীম করো এবং উনার ছানা-ছিফত বা প্রশংসা করো সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে সদা-সর্বদা।” এ আয়াত শরীফ দ্বারা বান্দা-বান্দি ও উম্মতের জন্য তিনটি বিষয় ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়- আর তাহলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত, তা’যীম-তাকরীম ও ছানা-ছিফত।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, প্রথম বিষয় হচ্ছে খিদমত। এখন উম্মত সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে আঞ্জাম দিতে পারবে না যেহেতু তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেছেন। তবে বর্তমানে উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করে উনার খিদমতের আঞ্জাম দিতে হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে আর্থিক খিদমতের আঞ্জাম দেয়া সকলের জন্যই ফরয। সাথে সাথে তা অশেষ ফযীলতেরও কারণ। অর্থাৎ সাধারণভাবে কেউ যদি এক টাকা খরচ করে তবে সে দশ টাকা খরচ করার ফযীলত পাবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “যে একটি নেকী করবে তাকে এর বিনিময়ে কমপক্ষে দশটি ছওয়াব দেয়া হবে।” আর জিহাদে বা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় দান করলে সাত শতগুণ পর্যন্ত ফযীলত লাভ করবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমাদের সম্পদ আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করার মেছাল হচ্ছে যেমন একটি বীজ থেকে সাতটি শীষযুক্ত গাছ উৎপন্ন হয়। প্রতিটি শীষে একশতটি করে বীজ বা দানা উৎপন্ন হলো। অর্থাৎ সাতটি শীষে সাতশতটি বীজ বা দানা উৎপন্ন হলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা এর চেয়ে বহুগুণ বেশি দিয়ে থাকেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রশস্তকারী অর্থাৎ পর্যাপ্ত দানকারী ও অধিক জ্ঞানী।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে কেউ যদি এক মুদ (১৪ ছটাক) বা অর্ধমুদ (৭ ছটাক) গম দান করে তবে সে অন্যান্য নেক কাজে উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করলে যেই ফযীলত তার চেয়ে বেশি ফযীলত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ! যে প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে তোমরা গালমন্দ, সমালোচনা বা দোষারোপ করো না। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় দান করো, তবুও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আমার খিদমতে এক মুদ (১৪ ছটাক) বা অর্ধ মুদ (৭ ছটাক) গম হাদিয়া করে যে ফযীলত অর্জন করেছেন তার সমপরিমাণ ফযীলত তোমরা অর্জন করতে পারবে না।” অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য হাদিয়া করে যে বেমেছাল ফযীলত হাছীল করেছেন পরবর্তী উম্মত যদি সেই ফযীলতের অনুরূপ ফযীলত হাছিল করতে চায় তাহলে তাদের কর্তব্য হলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সর্বোচ্চ তাওফীক্ব বা সাধ্য অনুযায়ী ব্যয় করা। মূলত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে মাত্র এক দিরহাম খরচ করার অর্থ হচ্ছে নিশ্চিতরূপে জান্নাত লাভ করা। যেমন এ প্রসঙ্গে বিশ্ব সমাদৃত ও সুপ্রসিদ্ধ মীলাদ শরীফ-এর কিতাব “আন নি’য়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম”-এ বর্ণিত আছে, (নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে শ্রেষ্ঠ মানুষ) হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে এক দিরহাম ব্যয় করবে, সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে। অর্থাৎ সে নিশ্চিত জান্নাতী হবে।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিষয় হচ্ছে- তা’যীম-তাকরীম ও ছানা-ছিফত। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে নিজ গৃহে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সমবেত করে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশিতে তাসবীহ-তাহলীল ও দুরূদ শরীফ পাঠ করতেছিলেন। ঠিক এমন সময় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত মজলিসে তাশরীফ আনলেন। তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এমন মীলাদ শরীফ পাঠের মজলিস দেখে সন্তুষ্ট হয়ে উনাদের উদ্দেশ্য করে ইরশাদ করলেন- আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেলো।” সুবহানাল্লাহ!

অন্য হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- “হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- একদা আমি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়িতে গেলাম। সেখানে দেখলাম তিনি বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে নিজ সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে সমবেত করে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এমন সময় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সেখানে তাশরীফ আনতে দেখে উপস্থিত সকলেই দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করতঃ আহলান সাহলান জানিয়ে আসন মুবারক-এ বসালেন। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মীলাদুন নবী উদযাপনের এমন মজলিস দেখে সবাইকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ ফরমান, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা উনার রহমতের দরজা আপনাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা আপনাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। যে কেউ আপনাদের মতো মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনের এমন আয়োজন করবে তারাও অনুরূপভাবে নাজাত লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এর সূরা মারইয়াম-এর ১৫ নম্বর আয়াত পাক-এ হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার শানে ইরশাদ ফরমান-“উনার প্রতি শান্তি সালাম অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক যেদিন তিনি দুনিয়ায় আগমন করেন অর্থাৎ বিলাদত শরীফ লাভ করেন ও যেদিন তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন আবার যেদিন তিনি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপ হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার নিজের বক্তব্য উল্লেখ করে কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- “আমার প্রতি সালাম (অবারিত শান্তি) যেদিন আমি বিলাদত শরীফ লাভ করি, যেদিন আমি বিছাল শরীফ লাভ করবো এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো।” সুবহানাল্লাহ! (সূরা মারইয়াম : আয়াত শরীফ ৩৩)
এ আয়াত শরীফদ্বয় দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ ও বিছাল শরীফ দিবস বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য অশেষ রহমত, বরকত ও সাকীনার কারণ।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- সকল বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যথাযথ খিদমত করা অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খিদমতের আঞ্জাম দেয়া, তা’যীম-তাকরীম ও ছানা-ছিফত করা; যা অশেষ ফযীলত ও পরকালে নাজাত লাভ করার অন্যতম উসীলাও বটে। তাই কুল-কায়িনাতের জন্য ফরয ওয়াজিব হচ্ছে- সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম, রবীউল আউয়াল শরীফ মাস তো অবশ্যই বরং অনন্তকাল খিদমতের আঞ্জাম দেয়া, তা’যীম-তাকরীম ও ছানা-ছিফত করা। বিশেষ করে পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ মাসে সর্বপ্রকার হারাম-নাজায়িয কাজ থেকে বিরত থেকে সম্পূর্ণ মাসব্যাপী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত বর্ণনায় মশগুল থাকা।
-০-


তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © দৈনিক আল ইহসান | দৈনিক আল ইহসান.

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment