মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফই সমগ্র উম্মাহর জন্য বেমেছাল রহমতস্বরূপ

আজকে যদি আমরা পেছন ফিরে তাকাই, চলে যাই মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ প্রকাশের পূর্বকালে, তাহলে আমাদের সামনে ভেসে উঠে সেই ঘোর অমানিশার তমসাবৃত চিত্র। যেটা অনেকটা যেন আইয়ামে জাহিলীয়াতেরই প্রতিচ্ছবি। যখন আলিম দাবিদারদের কোনো জবাবদিহিতা ছিল না, কোনো স্বচ্ছতা ছিল না, কোনো দায়িত্ববোধ ছিল না, ছিল স্বেচ্ছাচারিতা, মূর্খতা আর দায়িত্বহীনতা। ইসলামের নামধারী পত্রিকাগুলো যে যার ইচ্ছামত লিখতো, যা কিছু ইচ্ছা রায় দিতো। কিন্তু এ সম্পর্কে কোনো দলীল প্রমাণ বা জবাবদিহি করার প্রবৃত্তি তাদের মোটেই ছিল না। প্রকাশিত লেখার প্রেক্ষিতে যে মানুষ দলীল চেয়ে পাবে ও পেতে পারে এ ধরনের কোনো জবাবদিহি বোধ তাদের মধ্যে ছিল না। তারা যা কিছু লিখতো তা কোথা থেকে লিখতো, কোনো কিতাব থেকে লিখতো তা উল্লেখ করার মতো কোনো স্বচ্ছতাও তাদের ছিল না। তদপুরি একটি ভুল মাসয়ালা লিখলে তার উপর আমল করলে সমূদয় গুনাহ যে তাদের উপর বর্তাবে সে ধরনের কোনো দায়িত্ববোধ তাদের ছিল না। অর্থাৎ সয়লাব ছিল উলামায়ে ‘সূ’দের এক প্রবল অরাজকতায়। কিন্তু পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “মহান আল্লাহ পাক প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন করে মুজাদ্দিদ তথা হাদী পাঠাবেন।” (আবু দাউদ শরীফ) ঠিক যথাযময়ে গর্জে উঠলেন, বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউসুল আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, আওলাদে রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমান যামানার তাজদীদী মুখপত্র- ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ।’ মাত্র ২৫৮ সংখ্যার মাধ্যমে আল বাইয়্যিনাত যেন গোটা পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছে, বাতিলের মুখোশ উম্মোচন করে দিয়েছে, ইসলামী জাগরণ তৈরি করেছে। আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার এই বেমেছাল ও বেপোরোয়া ভূমিকা রীতিমত গবেষণার বিষয়। সংক্ষিপ্ত পরিসরে যা উল্লেখ করা হলো মূলত, আল বাইয়্যিনাত শরীফ সম্পর্কে তা না বলারই নামান্তর। তবুও এ লিখা এ ধরনের একটি দুর্লভ প্রয়াস মাত্র। আল বাইয়্যিনাত শরীফ মুফতী-মাওলানাদের জ্ঞানকে পূর্ণ ও সমৃদ্ধ করে দিচ্ছে: যামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত কথিত মুফতী-মাওলানাদের জ্ঞানকেও একইভাবে পূর্ণ ও সমৃদ্ধ করছে। কারণ আল বাইয়্যিনত শরীফ-এ যে ব্যাপক দলীল দেয়া হয় তা সাধারণভাবে কোনো ব্যক্তি তো নয়ই, এমনকি কোনো মাদরাসা বা অপর কোনো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের জন্যও সংগ্রহ করা সত্যিই দুষ্কর। কারণ মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার এই দুর্লভ সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউসুল আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, আওলাদে রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল প্রজ্ঞা, প্রচেষ্টা তথা অব্যক্ত রূহানিয়তের সমৃদ্ধি বলে। যা আর কারো পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। আল বাইয়্যিনাত সাধারণ মানুষকে দলীল নামক শব্দের সাথে সম্পৃক্ত করেছে, তাদের দলীল চাওয়ার অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছে। এতদিন ছিল যখন দলীল চাওয়া-পাওয়া এবং বর্ণনা করা যেন কেবল কথিত আলিম উলামাদের ব্যাপার ছিল; কিন্তু মাসিক আল বাইয়্যিনাত সে কায়েমী ধারণার ভিত্তিমূলে আঘাত হেনেছে। আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার উসীলায় এখন তারা জেনেছে যে, মুসলমানগণের অবস্থা দুটি। এক যদি তারা না জানে তবে জিজ্ঞেস করা তাদের নায্য অধিকার। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমরা যারা জানো না, যারা জানেন তাদের কাছে জিজ্ঞস করে জেনে নাও।” মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার সুওয়াল-জাওয়াব, ফতওয়া ইত্যাদি পড়ে সাধারণ মানুষ এখন ‘এত প্রশ্ন করতে হয় না, এত দলীল জিজ্ঞেস করতে হয় না।’ উলামায়ে ‘সূ’দের এ সমস্ত বক্তব্য যে অবান্তর ও মানুষকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত তা মুসলমানগণ বুঝতে পেরেছে। তাদের বিশ্বাস জন্মেছে যে, জানতে চাওয়া তাদের ঈমানের অধিকার, আর সে অধিকার বলে শুধু জিজ্ঞাসা করাই নয় বরং জিজ্ঞাসার প্রেক্ষিতে জবাবের দলীল জানতে চাওয়াও তাদের আরো নায্য অধিকার। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমরা যদি সত্যবাদী হয়ে থাক তবে দলীলসমূহ পেশ কর।” প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য যে, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ পাঠ করে সাধারণ মানুষ এখন আর বিনা দলীলে পরিতৃপ্ত হয় না। তারা আজ পেতে অভ্যন্ত হয়েছে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার মাধ্যম ডজন ডজন তথা শত শত দলীল বা কিতাবের প্রমাণ। তাই সাধারণ মানুষও আজ অবগত হয়েছে, হেদায়া, বেকায়া, নেহায়া, এনায়া, ফতহুল বারী, ফতহুল ক্বাদীর, দুররুল মুখতার, গায়াতুল আওতার, মারাকিউল ফালাহ, নূরুল ইজাহ, মালাবুদ্দা মিনহু, রদ্দুল মোহতার, শামী, তিবী, তালীকুছ হুবীহ, তাতারখানিয়া, ক্বাযীখান, খোলাছা, বাহরুর রায়িক ইত্যাদি ইথ্যাদি হাজার হাজার প্রামাণ্য কিতাব সম্পর্কে। আল বাইয়্যিনাত শরীফ সাধারণ মানুষকে, উলামায়ে ‘সূ’দের চ্যালেঞ্জ করার হিম্মত যুগিয়েছে। উলামায়ে ‘সূ’দের দাবিয়ে রাখার হুমকীতেও আর তারা থেমে থাকছে না, তারা মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার তাছিরে আজ বুকটান করে উলামায়ে ‘সূ’দের হারাম আমলসমূহের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার এবং তদপ্রেক্ষিতে দলীল চাওয়ার হিম্মত পাচ্ছে। তাদের দেয়া মনগড়া, ভিত্তিহীন জবাবের পরিবর্তে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার উসীলায় উলামায়ে ‘সূ’দের কৃত ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, লংমার্চ, হরতাল, ব্লাসফেমী, মেয়েলোকের নেতৃত্ব গ্রহণ, ইসলামের নামে নির্বাচন, গণতন্ত্র ইত্যাদি হারাম হওয়ার দলীল জানছে এবং আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার দলীল হাতে নিয়ে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে উলামায়ে ‘সূ’দেরকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কুওওত পাচ্ছে। আল বাইয়্যিনাত এমন এক নিয়ামত, যা ফিতনা তথা গৃহযুদ্ধ থেকে হিফাযতের কারণ: মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমরা সকলে মহান আল্লাহ পাক উনার রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করো এবং তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়ো না। আর তোমরা সে নিয়ামতের কথা স্মরণ করো, যা মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের দিয়েছেন।” বলাবাহুল্য, বর্তমান যামানায় দলীলবিহীন, মনগড়া ও ভ্রান্ত ফতওয়াজনিত কলহ-কোন্দলের প্রেক্ষিতে অকাট্য ও অখ-নীয় ব্যাপক দলীলভিত্তিক পত্রিকা “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” শরীফ মহান আল্লাহ পাক উনার সে নিয়ামত। যা গ্রহণে আমরা অবাঞ্ছিত সব কলহ, কোন্দল যার পরিণতি একটা সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধ, তা থেকে নাজাত লাভ করে মহান আল্লাহ পাক উনার রজ্জুকে শক্তভাবে ধরার একমাত্র উসীলারূপে পেয়েছি। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!

Uswatun Hasanah

0 comments:

Post a Comment