মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি আপনার আলোচনা বা সম্মানকে বুলন্দ করেছি।’
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘যার শরীরে আমার রক্ত মুবারক মিশেছে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না।’
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ঘাম, ইস্তিঞ্জা ও রক্ত মুবারক ছিলো সুঘ্রাণযুক্ত ও পবিত্র থেকে পবিত্রতম।
শুধু তাই নয়, উনার জিসিম মুবারক-এর কোনো কিছু কারো ভিতরে প্রবেশ করার কারণে তার জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।
যা উনার বেমেছাল পবিত্রতারই বাস্তব প্রমাণ।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘আবূ দাউদ, শামায়েলে তিরমিযী, আখলাকুন নবী’ ইত্যাদি কিতাবে উল্লেখ আছে, হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, “যখন রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের নিকট আসতেন তখন ঘ্রাণের সৌরভে আমরা অনুধাবন করতে পারতাম যে তিনি আসছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘মাদারেজুন নবুওওয়াত’ কিতাবে উল্লেখ আছে, হযরত জাবির ইবনে সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। একদা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার গণ্ডদেশে স্বীয় হস্ত মুবারক সঞ্চালন করলেন। এতে আমি এতো শীতলতা এবং সৌরভ অনুভব করলাম যেনো হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মুবারক হাতখানা এই মাত্র আতরের শিশি থেকে বের করে এনেছেন। এ অবস্থায় যদি কেউ উনার সাথে মুসাফাহা করতো তাহলে সারাদিন হাতের মধ্যে সুবাস লেগে থাকতো। তিনি যদি কখনো উনার হাত মুবারক দ্বারা কোনো শিশুর মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিতেন, তাহলে ওই শিশুটি অন্যান্য ছেলেমেয়েদের মধ্যে এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে যেতো। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘মাদারেজুন নুবুওওয়াত’ কিতাবে উল্লেখ আছে, হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, একবার জনৈক ব্যক্তির মেয়ের বিয়েতে সুগন্ধির প্রয়োজন দেখা দিলো, কিন্তু কোথাও সুগন্ধি পাওয়া গেল না। অবশেষে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফ-এ হাজির হয়ে সমস্যার কথা ব্যক্ত করা হলো। হুযূর পুর নূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটও তখন কোনো খুশবু ছিলো না। তখন তিনি উক্ত লোকটিকে বললেন, একটি শিশি নিয়ে এসো। লোকটি শিশি নিয়ে এলে তিনি নিজের শরীর মুবারক থেকে নির্গত পবিত্র ঘাম মুবারক দিয়ে শিশি ভরে দিয়ে বললেন, এই ঘাম মুবারক তোমার মেয়ের গায়ে মেখে দিও। ওই শিশির পবিত্র ঘাম মুবারক যখন মেয়েটির গায়ে মেখে দেয়া হলো, তখন সে ঘামের সৌরভে সমস্ত মদীনা মুনাওওয়ারা সুরভিত হয়ে গেলো। এরপর থেকে উক্ত বাড়িটির নাম রাখা হয়েছিল ‘বাইতুল মুয়াত্ত্বার’ বা ‘আতর ভবন’। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইস্তিঞ্জা মুবারক যমীন সাথে সাথে গ্রাস করে নিত এবং সে স্থানে সুবাস ছড়িয়ে পড়তো। উনার বড় ইস্তিঞ্জা মুবারক কেউ কোনো দিন দেখতে পায়নি। এ প্রসঙ্গে উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন ইস্তিঞ্জা মুবারক করে বায়তুল খালা থেকে বের হতেন, তখন আমি সেখানে প্রবেশ করে মুবারক ইস্তিঞ্জার কোনো আলামত দেখতে পেতাম না। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখন বলতেন, “হে উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম! আপনি কি জানেন, হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র পেট মুবারক থেকে যা কিছু বের হয়, যমীন তা শোষণ করে নেয়। কাজেই তা দেখতে পাওয়া যায় না।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে যে, তা অনেক হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবলোকন করেছিলেন এবং কোনো কোনো হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা তা পানও করেছিলেন। এ মর্মে বর্ণিত আছে যে, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রাতের বেলা যে খাটিয়ায় (চকি মুবারকে) শয়ন করতেন, তার নিচে একখানা পাত্র রেখে দেয়া হতো। যেনো প্রয়োজনে তিনি তাতে ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক রাখতে পারেন। এক রাত্রিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত পাত্রের মধ্যে ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক রাখলেন। সকালে তিনি হযরত উম্মে আয়মান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে বললেন, খাটের নিচে ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক ভর্তি একটি পেয়ালা রয়েছে, তা বাইরে ফেলে দিয়ে আসুন। হযরত উম্মে আয়মান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, রাতে আমার পিপাসা লেগেছিল বিধায় আমি তা পান করে ফেলেছি। একথা শুনে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মৃদু হাসলেন। কিন্তু উনাকে মুখ ধুয়ে নিতেও বলেননি বা ভবিষ্যতে এরূপ করতে নিষেধও করেননি, বরং ইরশাদ ফরমালেন, “এখন থেকে আপনার আর কোনো পেটের অসুখ হবে না।” সুবহানাল্লাহ! কতোই না সৌভাগ্য! কতোই না খোশ নছীব।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত বারাকাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নামে এক মহিলা ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাদিমা। একবার তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক পান করে ফেললেন। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে উম্মে ইউসুফ! অর্থাৎ হে বারাকাহ! আপনি চিরসুস্থ হয়ে গেলেন। আপনার কখনো কোনো অসুখ হবে না। পরবর্তীতে উক্ত মহিলা মরণ ব্যতীত জীবনে কোনো রোগেই আক্রান্ত হননি। সুবহানাল্লাহ!
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, জনৈক হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক পান করেছিলেন। ফলে তিনি জান্নাতী হওয়ার সুসংবাদপ্রাপ্ত হন এবং উনার সমস্ত শরীর থেকে সারা জীবন সুঘ্রাণ ছড়াতো। এমনকি উনার বংশধরদের মধ্যেও সাত পুরুষ পর্যন্ত সুঘ্রাণ পাওয়া যেতো। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ঘাম, ইস্তিঞ্জা মুবারক ইত্যাদি ছিলো পবিত্র থেকে পবিত্রতম। শুধু তাই নয়, উনার জিসিম মুবারক-এর কোনো কিছু কারো ভিতরে প্রবেশ করার কারণে তার জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। যা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল পবিত্রতারই বাস্তব প্রমাণ।
-০-
তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © দৈনিক আল ইহসান | দৈনিক আল ইহসান.
No comments:
Post a Comment