মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘সাবধান! নিশ্চয় যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের কোনো ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।’
মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিছাল শরীফ হচ্ছে ‘১১ রবীউছ ছানী’ যা ‘পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ’ নামে মশহুর।
এ বছরের জন্য আগামী ২৫ তাসি’ ১৩৮০ শামসী সন, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ঈসায়ী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াতি বা শুক্রবার ঐতিহাসিক সুমহান পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ।
তাই প্রত্যেক মুসলমান এবং বাংলাদেশ সরকারসহ পৃথিবীর সকল দেশের সরকারের উচিত- যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে এ মুবারক দিনটি পালন করা এবং এ দিনের সম্মানার্থে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র রবীউছ ছানী মাস অত্যন্ত বরকত ও ফযীলতপূর্ণ মাস। এই মাসেই মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ লাভ করেন।
গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ থেকে পবিত্র বিছাল শরীফ পর্যন্ত আমরা যে ওয়াকিয়া বা ইতিহাস দেখতে পাই; তার মধ্যে হাজারো নছীহত বা ইবরত মুবারক রয়ে গেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “সাবধান! নিশ্চয় যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের কোনো ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, “প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে মহান আল্লাহ পাক তিনি এই উম্মতের ইছলাহর জন্য একজন মহান মুজাদ্দিদ প্রেরণ করবেন, যিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সংস্কার করবেন।” অর্থাৎ বিদয়াত, বেশরা এবং শরীয়ত বিরোধী কাজগুলোর সংশোধন করবেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সেই রকম একজন খাছ ও বিশিষ্ট ওলীআল্লাহ ও মুজাদ্দিদ হলেন- গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ৪৭১ হিজরীতে পহেলা রমাদ্বান শরীফ, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ পবিত্র জিলান নগরে পবিত্র বিলাদত শরীফ লাভ করেন। পবিত্র জিলান নগরীটি তৎকালে ইরানে অবস্থিত ছিলো।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং সম্মানিতা মাতা উনার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের বংশধর অর্থাৎ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত পিতা উনার নাম মুবারক হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গী দোসত রহমতুল্লাহি আলাইহি। যেহেতু তিনি জিহাদ প্রিয় ছিলেন সেহেতু উনাকে জঙ্গী দোসত বলা হয়। আর উনার সম্মানিতা মাতা উনার নাম মুবারক উম্মুল খায়ের আমাতুল জাব্বার হযরত ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘বাহজাতুল আসরার শরীফ’ নামক কিতাব উনার মধ্যে হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ৫৬০ হিজরী সনের পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস হতে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
‘তাওয়ারিখে আউলিয়া শরীফ’ নামক কিতাব উনার মধ্যে হযরত শায়েখ আব্দুল ফতেহ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ১০ রবীউছ ছানী, ইয়াওমুল আহাদি বা রোববার দিবাগত রাত্রে অর্থাৎ ১১ রবীউছ ছানী লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ রাত্রে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গোসল মুবারক করেন। গোসলান্তে পবিত্র ইশা উনার নামায আদায় করে তিনি উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের গুনাহখাতা মাফের জন্য ও উনাদের উপর খাছ রহমতের জন্য দোয়া করলেন। এরপর গায়েব হতে আওয়াজ আসলো, “হে প্রশান্ত নফস, আপনি সন্তুষ্টচিত্তে, সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত হয়ে নিজ প্রতিপালক উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করুন। আপনি আমার নেককার বান্দা উনাদের মধ্যে শামিল হয়ে যান এবং পবিত্র বেহেশতে প্রবেশ করুন।” এরপর তিনি পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করে ‘তাআজ্জাজা’ (অর্থ বিজয়ী হওয়া) উচ্চারণ করতে লাগলেন এবং তিনি আল্লাহ, আল্লাহ, আল্লাহ বললেন। এরপর উনার পবিত্র জিহ্বা মুবারক তালু মুবারক উনার সাথে লেগে গেলো। এভাবে ৫৬১ হিজরী উনার ১১ রবীউছ ছানী, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহান দরবারে প্রত্যাবর্তন করলেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন) আর এ পবিত্র দিনটিই সারাবিশ্বে ‘পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম’ নামে মশহুর।
এ বছরের জন্য আগামী ২৫ তাসি’ ১৩৮০ শামসী সন, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ঈসায়ী সন ইয়াওমুল জুমুয়াতি বা শুক্রবার ঐতিহাসিক সুমহান পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জীবনী মুবারক উনার মধ্যে অনেক নছীহত ও ইবরত মুবারক রয়ে গেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা ইউসূফ শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণনা করার পর বলেন, “নিশ্চয় এই ঘটনার মধ্যে জ্ঞানীগণ উনাদের জন্য রয়েছে নছীহত।” এ পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে ছাবিত করা হয় যে, পরবর্তী লোকদের জন্য পূর্ববর্তী লোকদের ঘটনাগুলো ইবরতস্বরূপ। তাই প্রত্যেকের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক জেনে উনাকে মুহব্বত ও অনুসরণ করে আল্লাহওয়ালা ও আল্লাহওয়ালী হওয়ার কোশেশ করা এবং পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারসহ পৃথিবীর সকল দেশের সরকারের উচিত- যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে এ মুবারক দিনটি পালন করা এবং এ দিনের সম্মানার্থে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা। এ মুবারক দিনটি পালনার্থে আমরা আমাদের সুন্নতী জামে মসজিদে আগামী ১০ রবীউছ ছানী, ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার বাদ আছর থেকে ঈছালে ছওয়াব উনার মাহফিলের আয়োজন করা হবে ইনশাআল্লাহ!
-০-
তথ্যসূত্র:█║▌│█│║▌║││█║▌│║█║▌ © আল ইহসান.নেট | al-ihsan.net